রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রপ্তানিকালে গার্মেন্ট পণ্য লুটচক্রের সাতজন আটক

উদ্ধার প্রায় ৫ কোটি টাকার মালামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ডেমরা থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার রপ্তানিযোগ্য চোরাই গার্মেন্ট পণ্যসহ সংঘবদ্ধ    আন্তজেলা ডাকাতচক্রের হোতাসহ  সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- তাওহিদুল কাউছার (৪২), নাজিম (৩৫), মাসুদ (৩৫), দুলাল (৪৫), মিরাজ উদ্দিন (৩৩), আবদুল আল মাসুদ (৩০) ও সাইফুল ইসলাম (২২)।

র‌্যাব-৪ এর একটি দল ডেমরার একটি প্যাকেজিং কারখানার সামনে এবং ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ হাজার পিস গার্মেন্ট সামগ্রী ও কাভার্ড ভ্যানসহ তাদের গ্রেফতার করে। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানা থেকে গার্মেন্টের মালামাল বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার সময় পথে কিছু কাভার্ড ভ্যান থেকে প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ দামি গার্মেন্ট মালামাল চুরি হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছায়া তদন্তের এক পর্যা‌য়ে কারখানা থেকে মালামাল চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার সময় পথে কাভার্ড ভ্যান থামিয়ে গার্মেন্ট পণ্য চুরির খবরে শুক্রবার রাতে ডেমরায় অভিযানে যায়। র‌্যাব বলছে, গ্রেফতাররা দীর্ঘদিন ধরে মিরপুর, উত্তরা, আশুলিয়া ও গাজীপুর থেকে বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মালামাল চুরির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা মালামাল পরিবহনে নিয়োজিত চালকদের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে একটি দুর্ধর্ষ ডাকাতচক্র গঠন করে এসব করছিল। ডাকাতির পর সেসব মালামাল স্থানীয় মার্কেটে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দিত। এ ধরনের কয়েকটি চক্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সক্রিয় রয়েছে এবং প্রতি বছর এসব চক্রের মাধ্যমে শত কোটি টাকা মূল্যের দেশি পোশাক চুরি হয়ে যাচ্ছে। এরা বিশেষ কৌশলে কাভার্ড ভ্যানের সিলগালা করা তালা অক্ষত রেখে পাশের কাভারের নাট-বল্টু খুলে প্রত্যেক কার্টনের ভিতরে থাকা মালামালের ৩০-৪০ শতাংশ রেখে দেয়। পরে সেগুলো আবার আগের মতোই সঠিকভাবে কার্টন বাঁধাই করে কাভার্ড ভ্যানে লোড করে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে নিয়ে যেত; যাতে কারখানার মালিক ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কেউ সন্দেহ না করতে পারে। আর যে পরিমাণের মালামাল কার্টন থেকে সরিয়ে রাখে ঠিক সে ওজনের ঝুট ভিতরে ঢুকিয়ে কার্টন প্যাকেট করে দেয়। যার ফলে বন্দরে স্ক্যানিং কিংবা ওজন পরিমাপের মেশিনে কোনো ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ে না। এ ছাড়াও মাঝে মধ্যে তারা মালামালসহ সম্পূর্ণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানও লুট করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। র‌্যাবের ভাষ্য, গ্রেফতার তাওহীদুল কাউছার (৪২) বরিশালের উজিরপুর উপজেলার যোগীকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।

তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে মিরপুর ঝুটপট্টি এবং উত্তরায় স্টকলটের ব্যবসা করে আসছেন। এ সময় বিভিন্ন চোরচক্রের কাছ থেকে গার্মেন্টের লুণ্ঠিত মালামাল কেনা-বেচার এক পর্যায়ে নিজে ও গ্রেফতার নাজিম, মাসুদ, দুলাল, মিরাজ, আবদুল আল মাসুদ, সাইফুলসহ অজ্ঞাত আরও তিন/চারজনকে নিয়ে আন্তজেলা ডাকাত চক্র গড়ে তোলেন। আর নাজিম (৩৫) পেশায় ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে গার্মেন্ট পণ্য পরিবহনের ড্রাইভারদের সঙ্গে তার পরিচিতি ও সখ্য রয়েছে। এদিকে গ্রেফতার মিরাজও (৩৩) কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভার। তিনি কাভার্ড ভ্যানের সিলগালা তালা অক্ষত রেখে নাট-বল্টু খুলতে পারদর্শী। অপর গ্রেফতার আবদুল আল মাসুদ ও সাইফুল গার্মেন্ট পণ্য লোডিং-আনলোডিং শ্রমিক হিসেবে এ চক্রে কাজ করতেন। তাদের নামে বিভিন্ন থানায় গার্মেন্ট পণ্য চুরির একাধিক মামলা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর