খুলনায় নগরজুড়ে সড়কে সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়িতে বিভিন্ন স্থানে ওয়াসার মূল পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত তিন মাসে প্রায় ২০টি স্থানে পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে জোড়াতালি দেওয়া হয়। এতে পাইপলাইনের দীর্ঘ স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে সড়ক ও ড্রেনের খোঁড়াখুঁড়ির সময় নকশা দেখে করা উচিৎ। দায়িত্বহীনতায় একদিকে জনভোগান্তি তৈরি হয়, অন্যদিকে সরকারি সম্পত্তি ক্ষতির মুখে পড়ে।
জানা যায়, সড়ক সংস্কার কাজে গতকাল নগরীর রূপসা ট্রাফিফ মোড় এলাকায় শ্রমিকরা স্কেভেটারের মাধ্যমে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু করে। সকাল সোয়া ১০টার দিকে স্কেভেটারের আঘাতে ওয়াসার মূল পাইপলাইন ফেটে যায়। এতে তীব্র গতিতে পানি বের হতে থাকে। এক পর্যায়ে আরেকটি স্কেভেটার দিয়ে পানি বন্ধ করার চেষ্টা করলেও কাজে লাগেনি। শ্রমিকরা জানায়, পানির পাইপলাইনের অবস্থান বুঝতে না পারায় ঘটনাটি ঘটেছে। পরে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে আপাতত পানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ জানান, পানি সরবরাহ কাজে খুলনায় প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে। সড়ক ও ড্রেন সংস্কার কাজে অসতর্কতায় প্রতি মাসেই ৫-৭টি স্থানে পাইপ ফাটানোর ঘটনা ঘটছে। কখনো সড়ক বিভাগ, কখনো সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ, টিঅ্যান্ডটির সংস্কার কাজে বিভিন্ন সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি চলেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগাযোগ হলেও যারা সড়কে কাজ করেন সেই শ্রমিকদের মধ্যে পারদর্শিতা ও সতর্কতা থাকে না। খোঁড়াখুঁড়ির সময় সেখানে সংশ্লিষ্ট দফতরের ইঞ্জিনিয়ার থাকার কথা, তিনি নকশা দেখে কাজ করবেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হয়নি। ওয়াসা কর্মকর্তারা বলছেন, পাইপ ফাটানোর ফলে এর স্থায়িত্বে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হচ্ছে। একটা নতুন পাইপ আরেকটা জোড়াতালি দেওয়া দুইটার মধ্যে পার্থক্য থেকে যায়।
জানা যায়, এর আগে আন্ডারগ্রাউন্ডে টিঅ্যান্ডটির লাইন স্থাপনের সময় নগরীর বিভিন্ন স্থানে ওয়াসার পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া সড়ক বিভাগে ময়লাপোতা-গল্লামারী সংস্কারকালে অসংখ্য পানির সংযোগ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, পাইপলাইন ফাটার পর তা জোড়াতালি দিলেও অনেক ত্রুটি থেকে যায়। যেখানে ফেটে যায় সেখানে মাঝেমধ্যে ময়লা পানি ঢোকে। যারা সড়কে কাজ করে তাদের একটা মার্কিং থাকা উচিৎ। কোথায় পাইপলাইন আছে শ্রমিকদের জানার কথা নয়। দায়িত্ব অবহেলার কারণে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়। একটা রাস্তা খুঁড়তে গেলে সেখানে আন্ডারগ্রাউন্ডে টিঅ্যান্ডটি, বিদ্যুৎ, ওয়াসার পাইপলাইন থাকে, নতুন সুয়ারেজ লাইন হচ্ছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পরিকল্পনা অনুযায়ী খোঁড়াখুঁড়ি করা উচিৎ।