বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যসেবায় ওষুধের ব্যয় বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যসেবায় ওষুধের ব্যয় বেড়েছে

২০১৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দেশে মানুষের চিকিৎসা খাতে ব্যক্তিগত ব্যয় বা আউট অব পকেট এক্সপেনসেস (ওওপি) আরও বেড়েছে। এ অতিরিক্ত ব্যয় ২০১৫ সালে ছিল ৬৭ শতাংশ, যা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় ওষুধে যা ৬৪ শতাংশ।

গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের আয়োজনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস-ষষ্ঠ রাউন্ডের চূড়ান্ত ফলাফল অবহিতকরণ কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বাংলাদেশ রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. বর্দন জং রানা প্রমুখ।

২০২০ সালে বাংলাদেশে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে ব্যক্তির নিজ খরচে। আর স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয় ছিল ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ, যা ২০১৫ সালের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এ ছাড়া এ খাতে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ব্যয়ের পরিমাণ ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস সেলের ফোকাল পারসন ডা. সুব্রত পাল ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রাপ্ত ফলাফল তুলে ধরেন।

এ সময় তিনি বলেন, মানুষের খরচ করার প্রবণতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, মোট ব্যক্তি পর্যায়ে খরচের ৫৪ শতাংশই খরচ করে থাকেন দেশের শীর্ষ ধনীরা। ওওপির বিশ্লেষণে দেখা যায় জনসংখ্যার সর্বনিম্ন শতাংশ মাথাপিছু ২০০ টাকা স্বাস্থ্যের জন্য নিজ থেকে ব্যয় করে থাকে। যেখানে জনসংখ্যার শীর্ষ ধনী সমাংশ খরচ করে এর তুলনায় আট গুণ বেশি টাকা অর্থাৎ ১ হাজার ৭১৪ টাকা। একই এলাকা বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে মাথাপিছু খরচের তুলনায় দেখা যায় যে, সবচেয়ে ধনী পরিবারগুলো দরিদ্রদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি ব্যয় করেছে। দেশে স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু ব্যয় ৫৪ ডলার বা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১০৫ টাকা হিসাবে)। এ ব্যয় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের চেয়েও কম বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, দুর্নীতি যদি বন্ধ করা যায় তাহলে অনেককিছুর পরিবর্তন হবে। পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোর মতো সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যবীমা চালু করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবায় ব্যক্তির পকেট খরচ (স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তি পর্যায়ের খরচ) অনেক বেশি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, ওষুধের দাম বাড়ার পেছনে বড় একটি কারণ এর মার্কেটিং প্রক্রিয়া। অনেক চিকিৎসক শুনি ওমরাহ পালনে যান ওষুধ কোম্পানির টাকায়। অনেকে বলে, ফ্রিজ নেয় টেলিভিশন নেয়। কেউ আছে ফ্ল্যাট পর্যন্ত কিনে দেয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে কাঁচামাল আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। তাই ওষুধের দাম বাড়ানো নিয়ে চাপ রয়েছে। এ জন্য চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর