শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাক্কু মানুষের টাকা মেরে ৭৮টি ফ্ল্যাট করেছেন : এমপি বাহার

কুমিল্লা প্রতিনিধি

সাক্কু মানুষের টাকা মেরে ৭৮টি ফ্ল্যাট করেছেন : এমপি বাহার

আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার

কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার অভিযোগ করেছেন, সাবেক মেয়র সাক্কু সহজ-সরল মানুষের মতো কথা বলেন, অথচ তিনি মানুষের টাকা মেরে ৭৮টি ফ্ল্যাট করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ব্যবসায়ী সমিতির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করি তখনো আমাকে অনেকে হতাশ করেছেন। কিন্তু জনগণ আমাকে শক্তি দিয়েছে। তাদের শক্তিতে আমি পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন করেছি। আমার পরে এলো কে? আকবর ভাই, সাক্কু ভাই। তারা কী করেছেন? প্ল্যান পাস করিয়েছেন, আর টাকা খেয়েছেন। সাক্কু সহজ-সরল মানুষের মতো কথা বলেন। অথচ তিনি মানুষের টাকা মেরে ৭৮টি ফ্ল্যাট করেছেন। আমি সবই জেনেছি পরে। রূপায়ণ টাওয়ার করতে ৭৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। প্ল্যানেট এসআর-এর প্ল্যান পাস করতে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই সাক্কু তার নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন। কুমিল্লা সিটিকে ওভারলোড করে দিয়েছেন সাক্কু। আজ যানজটের জন্য শহরে হাঁটা যায় না। ভবনের পর ভবনের প্ল্যান পাস হয়েছে নিয়ম না মেনেই। আমি রিফাতকে তিল তিল করে কুমিল্লার মানুষের জন্য গড়ে তুলেছি। রিফাতের ছয় মাস হয়েছে মেয়র   হওয়ার। আপনারা ৬ টাকা ঘুষের কোনো প্রমাণ পেয়েছেন? পেলে আমাকে বলুন। আমি তখন আর এখানে (মঞ্চে) থাকব না, আমি চলে যাব ওখানে (জনগণের কাতারে)। তখন আর রিফাতকে চেয়ারে থাকতে দেব না।’

এমপি বাহার আরও বলেন, ‘কুমিল্লা এখন আগের কুমিল্লা নেই। আমাকে সবাই বলে সংস্কৃতিবান্ধব, অনেকে বলে শিক্ষকবান্ধব, আর এই অনুষ্ঠানে আসার পর বলছেন, আমি নাকি ব্যবসায়ীবান্ধব। আমি আসলে কোনো বান্ধবই নই। আমি কুমিল্লাবান্ধব, জণগণের বান্ধব। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, জাতীয় অর্থনীতিতে আমাদের প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছেন। আমরা মাছ উৎপাদনে এখন দেশজুড়ে ভালো অবস্থানে। যারা ১৯৭১-এর যুদ্ধের পর আমাদের তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিল তারা এখন হিংসা করে। আপনারা মুরগি খান কত করে? দেড় শ টাকা। আর পাকিস্তানে মুরগির কেজি ৬০০ টাকা। আমরা কী ভালো নেই?’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. সানাউল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত। সমন্বয়ক ছিলেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন। অনুষ্ঠানে দোকান মালিক সমিতির নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এমপি বাহারের অভিযোগের বিষয়ে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তিনি একটা দল করেন আমি আরেকটা দল করি। তাকে আমি এখনো বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করি। উন্নয়নের স্বার্থে আমরা একসঙ্গে চলেছি। তিনি যেসব কথা এখন বলছেন, সেগুলো আগে বলেননি কেন? আমি দুর্নীতি করে থাকলে তিনি মামলা করেন না কেন? আমাদের একটা বংশ মর্যাদা আছে। আমরা মানুষের বিরুদ্ধে বলতে পছন্দ করি না।’ উল্লেখ্য, ১৫ জুনের কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে এমপি বাহার সমর্থিত আরফানুল হক রিফাতকে নৌকা মার্কায় ৩৪৩ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করে বহিষ্কৃত হন। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর