শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুয়াকাটায় টার্মিনাল হবে কবে

দেড় বছর আগে কাজ শুরু হলেও অগ্রগতি নেই

রাহাত খান, বরিশাল

কুয়াকাটায় টার্মিনাল হবে কবে

সাগরকন্যা কুয়াকাটায় একটি বাস টার্মিনাল না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা। দেড় বছর আগে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু হলেও সামান্য কিছু কাজ করে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। এ কারণে নিয়মিত ও রিজার্ভ বাসগুলো যত্রতত্র রাখা হয় মূল সড়কের পাশে। সরু ওই সড়কের পাশে যানবাহন রাখায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে পর্যটকদের। সরকারি ছুটির দিনে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি মূল সড়কের পাশে অস্থায়ী টার্মিনাল স্থাপন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত টার্মিনাল নির্মাণ করার কথা জানিয়েছেন পৌরমেয়র।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটায় পর্যটক বেড়েছে কয়েকগুণ। বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত পর্যটকে মুখর থাকে কুয়াকাটা সৈকত। নিয়মিত রুটের বাস ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে শত শত রিজার্ভ বাসে পর্যটক আসে কুয়াকাটায়। এতে ব্যাপক ভিড় হয় সেখানে। টার্মিনাল না থাকায় মূল সড়কের পাশে সারি সারি করে রাখা হয় বাসগুলো। এতে ছোট যান এবং পর্যটক চলাচলে সমস্যা হয়। লেগে থাকে যানজট। ফেব্রুয়ারিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসায় অনেকটা অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় সেখানে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেত পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে মহাসড়কের পাশে তুলাতলী এলাকায় অস্থায়ী টার্মিনাল স্থাপন করে প্রশাসন। অস্থায়ী টার্মিনালে সাময়িক যানবাহন ব্যবস্থাপনা করা হলেও কুয়াকাটায় স্থায়ী বাস টার্মিনাল নির্মাণে তেমন অগ্রগতি নেই। দেড় বছর আগে পৌর কর্তৃপক্ষ ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করলেও বালু ভরাট আর মূল ভবনের শর্ট কলাম নির্মাণ করে কাজটি ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদার ধীর গতিতে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন কুয়াকাটা পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল হোসেন। তিনি জানান, বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে তুলাতলী এলাকায় অধিগ্রহণ করা ৬ একর জমিতে ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বালু ভরাট, সিমানা প্রচীর নির্মাণ ও তিন তলা ভিতের ওপর এক তলা ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় ১২টি স্টল, ওয়াশ জোন, নারী ও পুরুষের পৃথক টয়লেট-বাথরুম, নামাজের স্থান, ৬০০ মিটার ড্রেন ও ফুটপাত, আইল্যান্ডে সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন, স্ট্যান্ডিং পজিশনে আরবিসি ঢালাই এবং চত্বরে করা হচ্ছে হেরিংবন। মূল টার্মিনাল ভবন নির্মাণের জন্য ৬ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও গত দেড় বছরে অগ্রগতি সামান্য। বালু ভরাট আর মূল ভবনের পিলার (কলাম) নির্মাণ ছাড়া আর কিছুই হয়নি সেখানে।

যথা সময়ে টার্মিনাল নির্মিত না হওয়ায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের। তিনি দ্রুত টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ শেষ করার দাবি জানান।

আবুল খায়ের জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকে স্রোতের মতো পর্যটক আসছে কুয়াকাটায়। মধ্য ফেব্রুয়ারিতে কুয়াকাটা থেকে দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার বাসের লাইন পড়ে যায়। বাসগুলো সড়কের পাশে রাখায় পর্যটকরা স^াচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারত না। সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজটের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে মহাসড়কের পাশে তুলাতলী এলাকায় অনাবাদি জমিতে অস্থায়ী টার্মিনাল স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বাসগুলোকে অস্থায়ী টার্মিনালে প্রবেশ করতে বাধ্য করা হয়। সৈকতের দিকে কোনো বাস যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, এ কাজের মেয়াদ শেষ হয়নি। জুনের মধ্যে কুয়াকাটা বাস টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর