শনিবার, ৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
শেকৃবিতে গবেষণা

ক্যান খুলেই খাওয়া যাবে ইলিশ ও টুনা

ওলী আহম্মেদ, শেকৃবি

ক্যান (ঢাকনাসহ কৌটা) খুলে ঠাণ্ডা পানীয় পান করার অভিজ্ঞতা সবারই আছে। কিন্তু ক্যান খুলে মাছ খাওয়ার অভিজ্ঞতা, তাও যদি সেটা হয় ইলিশ মাছ? এরকম বিষয় নিয়েই গবেষণায় নেমেছেন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) একদল গবেষক। ইলিশ ও টুনা মাছের কৌটাজাতকরণ (ক্যানিং) প্রযুক্তি সম্পর্কিত এ গবেষণার মধ্যদিয়ে তাঁরা চেষ্টা করছেন, যাতে ‘রেডি-টু-ইট’ বা ক্যান খুলেই খাওয়া যায় ইলিশ ও টুনা মাছ। মৎস্য অধিদফতরের সাস্টেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের অর্থায়নে এ গবেষণা কর্মে শেকৃবির ফিশারিজ, অ্যাকোয়াকাচার অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদভুক্ত ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবীবের নেতৃত্বে গবেষণা সহযোগী হিসেবে সম্পৃক্ত আছেন একই অনুষদের ফিশিং অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাসুদ রানা। ইলিশ ও টুনার ক্যানিং প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রফেসর ড. কাজী আহসান হাবীব বলেন, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বিগত বছরগুলোতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদিত ইলিশের দেশে তো অবশ্যই, বিদেশেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এসব ইলিশ যদি কৌটাজাত করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যায় তাহলে এ খাত থেকে আরও বেশি আয় সম্ভব, যার সুফল পাবেন প্রান্তিক জেলেরাও। তিনি আরও বলেন, দেশের উপকূলীয় সামুদ্রিক এলাকায় প্রচুর টুনা ধরা পড়ে যা বাজারে খুব কম দামে বিক্রি হয়। অনেক সময় ক্রেতার অভাবে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে অযত্নে পড়ে থাকে এসব মাছ। জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ কৌটাজাতকৃত টুনা ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে। সেক্ষেত্রে টুনা মাছের ক্যানিং বিদেশে টুনা রপ্তানিতে আশার আলো দেখাবে।

প্রযুক্তিটির বিশেষত্ব জানতে চাইলে মাসুদ রানা জানান, এতে ইলিশের কাটা নরম হয়ে মাংসের সঙ্গে এমনভাবে মিশে যায়, ফলে কাটা বেছে খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। উপরন্তু নরম কাটা দেহে ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে বাড়তি জোগানই দেবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিশ নিউট্রিশনাল বায়োলজি ল্যাবে প্রযুক্তিটির অধিকতর উন্নয়নে ইলিশ ও টুনা মাছের স্বাদ, মান, নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বকাল সম্পর্কিত উন্নততর গবেষণা চলমান বলে জানান তিনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের ব্যস্ততাও। তাই রেডি-টু-ইট বা রেডি-টু-কুক খাদ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সেক্ষেত্রে এ চাহিদা মেটাতে ইলিশ ও টুনার ক্যানিং প্রযুক্তিটির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রযুক্তিটি স্বল্প ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে বিধায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা প্রযুক্তিটি গ্রহণের মাধ্যমে আয় বাড়াতে পারেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর