রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। দিনে-রাতে ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে রোদ ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। লোডশেডিংয়ে কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কম্পিউটারের দোকান, টেইলার্স, ইন্টারনেট সার্ভিস, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি সব ক্ষেত্রে ভোগান্তি বাড়ছে। প্রচ  গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ছোট শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সীরা।

জানা যায়, খুলনা নগরীর পল্লীমঙ্গল ফিডারের আওতায় সোনাডাঙ্গা, গোবরচাকা শেখপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত তিনবার লোডশেডিং দেওয়া হয়। এতে তিন ঘণ্টার বেশি সময় অন্ধকারে ছিলেন গ্রাহকরা। শেখপাড়া হাজী ইসমাইল লিংক রোডের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে প্রচ  গরমে ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। ছেলেমেয়ের লেখাপড়া বিঘিœত হয়। ঘামে ভেজা শরীর, অন্যদিকে মশার উৎপাত। রাত ৯টায় বিদ্যুৎ এলেও ১২টার দিকে আবার চলে যায়। গরমে ঘুম ভেঙে গেলে হাঁসফাঁস করতে থাকেন সবাই। রাত ১টা নাগাদ বিদ্যুৎ আসার পর আবার ৩টার দিকে চলে যায়। একইভাবে প্রায়ই দিনের বেলায় তিন- চারবার লোডশেডিংয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। 

ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) আওতায় খুলনা ও বরিশাল জোনে শুক্রবার রাতে বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম থাকায় লোডশেডিং বাড়তে থাকে।

শুক্রবার রাত ১২টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬০৫ মেগাওয়াট, সেখানে সরবরাহ ৫৩৮ মেগাওয়াট। ঘাটতি ৬৭ মেগাওয়াট। রাত ৩টায় চাহিদা ৫৩৪ মেগাওয়াটের বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫১১ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ২৩ মেগাওয়াট।   

এদিকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার কারণে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র নষ্ট হতে শুরু করেছে। লোডশেডিংয়ে দোকানপাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। হিমাগারে খাবার সংরক্ষণেও ঝামেলা হচ্ছে।

খুলনা আইচ অ্যান্ড কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের পরিচালক তাওহিদুল ইসলাম জানান, দিনে রাতে পার-পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যায়। একবার গেলে এক/দেড় ঘণ্টার আগে আসে না। আমদানিকারকদের কোটি কোটি টাকার আমদানি করা ফল কোল্ড স্টোরেজে থাকে। বিদ্যুতের অভাবে যা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমরা বিকল্প জেনারেটর দিয়ে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এতে খরচ অনেক বেশি লাগছে।

ওজোপডিকোর প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু হাসান জানান, বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এ অবস্থা তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ মিলছে না। তিনি বলেন, অফ পিক আওয়ারে (দিন) বিদ্যুতের চাহিদা-সরবরাহ কাছাকাছি থাকলেও পিক আওয়ারে চাহিদা বাড়তে থাকলে লোডশেডিংও বাড়তে থাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর