খাদ্য অধিদফতরের আওতায় হ্যান্ডলিং ঠিকাদার নিয়োগে পিএসএন পদ্ধতি (অতীত কার্য সম্পাদনের উৎকর্ষতা বিবেচনায় দরদাতা নির্বাচন) চালু হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ ঠিকাদাররা। নতুন এই পদ্ধতিতে ঠিকাদারের কাজের পূর্বের অভিজ্ঞতা, খাদ্য অধিদফতরে সম্পাদিত চুক্তির সংখ্যা, কাজের বিপরীতে গৃহীত বিলের পরিমাণ, সরবরাহকৃত সর্বোচ্চ শ্রমিক সংখ্যাসহ বিভিন্ন খাতে ১০০ নম্বরের শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
এতে যেসব ঠিকাদার বিগত দিনে এলএসডি, সিএসডি গোডাউন, সাইলো, ঘাট শ্রমিক হ্যান্ডলিংয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন তারাই পুনরায় ঠিকাদারি কাজ পাবেন। সাধারণ ঠিকাদারদের নতুন এ পদ্ধতিতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না।
খুলনার হ্যান্ডলিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নীরব নিবিড় এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আ. হক নাহিদ জানান, খাদ্য বিভাগে এতদিন হ্যান্ডলিং ঠিকাদার নিয়োগে ‘ওপেন টেন্ডার লোয়েস্ট বিডার’ পদ্ধতিতে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া হতো। এতে আগ্রহী ঠিকাদাররা সর্বনিম্ন শ্রমিক মজুরি উল্লেখ করে শিডিউল জমা দিতেন। যিনি সর্বনিম্ন দরদাতা তিনিই কাজ পেতেন। কিন্তু পিএসএন পদ্ধতিতে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা, গৃহীত বিলের পরিমাণ, সরবরাহকৃত সর্বোচ্চ শ্রমিক সংখ্যা সর্বনিম্ন দরদাতা বাছাইয়ে বিবেচিত হবে। সাধারণ ঠিকাদাররা প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় এ পদ্ধতিতে খাদ্য অধিদফতরের দরপত্রে অংশ নিতে অনেকেই আগ্রহী হবেন না। ফলে শিডিউল বিক্রি কম হলে রাজস্ব হারাবে সরকার। আবার সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও অভিজ্ঞতা কম থাকায় কাজ না পাওয়ায় খাদ্য অধিদফতরকে তুলনামূলক বেশি অর্থ দিয়ে শ্রমিক মজুরি পরিশোধ করতে হবে।এদিকে ঠিকাদার নিয়োগে পিএসএন পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে গতকাল খুলনার দৌলতপুরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হক অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. নাছির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থেই ঠিকাদার নিয়োগে উদ্দেশ্যমূলক শর্ত দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে একই প্রতিষ্ঠান একই সঙ্গে খুলনা যশোর মাগুরা সাতক্ষীরা ঝালকাঠিতে ২০টির অধিক হ্যান্ডলিং ঠিকাদারি কাজ পেয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে ওই প্রতিষ্ঠানেরই অভিজ্ঞতা বেশি থাকায় তারাই সব কাজ পাবে। এতে সামর্থ্যরে থেকেও বেশি কাজ পাওয়ায় কাজের মান খারাপ ও অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকরা মজুরি বঞ্চিত হবে। সরকারি অন্য দফতরে হ্যান্ডলিং ঠিকাদার নিয়োগে এ শর্ত না থাকলেও সম্প্রতি খাদ্য অধিদফতরের ঠিকাদার নিয়োগে অতীত কাজের উৎকর্ষ নির্ধারণের নামে সিন্ডিকেট তৈরি করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা পিএসএন পদ্ধতি বাতিল করে পূর্বের মতো দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়ার দাবি জানান।