শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

রংপুরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা শূন্য

আট জেলায় অর্জন ধান ১৫ এবং চাল ৩২ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুর বিভাগে বোরো ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে ৭ মে থেকে। চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এর মধ্যে কেটে গেছে এক মাস। এই এক মাসে রংপুর জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা শূন্য। অর্থাৎ রংপুরে জেলা খাদ্য অফিস এক ছটাক ধানও ক্রয় করতে পারেননি। রংপুর বিভাগের অন্যান্য জেলায় কিছু সংগ্রহ হলেও রংপুরে ধান সংগ্রহের খাতা এখন পর্যন্ত খোলা হয়নি। তবে চাল সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ২৬ শতাংশ। ফলে আমন মৌসুমের মতো এবার বোরো ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধান-চাল সরকারি মূল্যে গোডাউনে বিক্রি করলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের উৎপাদন খরচ উঠছে না। সরকারের নির্ধারিত দামের তুলনায় বাজারে দাম বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও সরকারি মূল্যে চাল সরবরাহ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের আট জেলায় এবার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৯৮৪ মেটিক টন। এক মাসে সংগ্রহ হয়েছে ৯ হাজার ৭২২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গাইবান্ধায় লক্ষ্যমাত্রার ৫ শতাংশ, কুড়িগ্রামে ৮ শতাংশ, লালমনিরহাটে ১৯ শতাংশ, নীলফামারীতে ৩৬ শতাংশ, দিনাজপুরে ২৬ শতাংশ, ঠাকুরগাঁওয়ে ২২ শতাংশ এবং পঞ্চগড়ে ২৮ শতাংশ অর্জন হয়েছে। গড়ে এ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্যদিকে চালের গড় সংগ্রহ হয়েছে ৩২ শতাংশ। এর মধ্যে রংপুর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার ২৬ শতাংশ, গাইবান্ধায় ২৪ শতাংশ, কুড়িগ্রামে ৩৮ শতাংশ, নীলফামারীতে ৪২ শতাংশ, দিনাজপুরে ৩২ শতাংশ, ঠাকুরগাঁওয়ে ৪০ শতাংশ এবং পঞ্চগড়ে ২০ শতাংশ অর্জন হয়েছে। রংপুর বিভাগে এবার চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ২৬৬ মেট্রিক টন। সেখানে গত ৭ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত এক মাসে অর্জন হয়েছে ১ লাখ ৮২৭ দশমিক ৬৯০ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি ধান কেনা হচ্ছে ৩০ টাকা এবং চাল কেনা হচ্ছে ৪৪ টাকায়। চাল সংগ্রহে বিভাগের আট জেলায় ৩ হাজার ৫৪৮ জন মিলার খাদ্য অফিসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে রংপুরে ৪৩৩ জন, গাইবান্ধায় ৪৪৭ জন, কুড়িগ্রামে ৩৫৭ জন, লালমনিরহাটে ২৩০ জন, নীলফামারীতে ২১৮ জন, দিনাজপুর ১ হাজার ১২৭ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫৭৭ জন এবং পঞ্চগড়ে ১৫৯ জন রয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ পড়ছে ১২ হাজার টাকার ওপর। এক বিঘা জমির ধান সরকারি মূল্য ১০ হাজার টাকার কিছু ওপরে। সরকারি মূল্যে ধান বিক্রি করলে কৃষকদের বিঘা প্রতি লোকসান হবে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। অন্যদিকে চাল ব্যবসীয়দের প্রতি কেজিতে আর্থিক ক্ষতি হবে ২ থেকে ৪ টাকা। সরকারি মূল্যে গোডাউনে ধান দিয়ে কৃষকদের লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন ব্যয়ও উঠছে না বলে অনেক কৃষক অভিযোগ করেন। বিঘায় প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা কম পাবে কৃষকরা উৎপাদন খরচের চেয়ে। তাই এবার সরকারি গোডাউনে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার চালের মূল্য ধরেছে ৪৪ টাকা কেজি। অথচ চাল উৎপাদনে খরচ পড়ছে ৪৫ থেকে ৪৭ টাকা।

রংপুরের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আসরাফুল আলম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এবার সংগ্রহ অভিযান সফল হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর