মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
টিআইবির গবেষণা তথ্য

মশক নিধনে বেশি ব্যয় ঢাকা উত্তর সিটিতে কম লক্ষ্মীপুরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মশক নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটির এই খাতে বছরে হোল্ডিং প্রতি বাজেট ২ হাজার ২৩৬ টাকা। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) হোল্ডিং প্রতি এই বাজেট ১ হাজার ১২৮ টাকা। অন্যদিকে মশক নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে কম বাজেট লক্ষ্মীপুর পৌরসভায়। সেখানে হোল্ডিং প্রতি বাজেট মাত্র ছয় টাকা। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কার্যালয়ে ‘ডেঙ্গু সংকট প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে গবেষণা করেছে টিআইবি। সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ১ হাজার ২৯৫ জন। যার মধ্যে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশই নারী। নারীদের মধ্যে বিলম্বে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা না গ্রহণের প্রবণতা এই বেশি মৃত্যুর কারণ। টিআইবির গবেষণায় জানানো হয়, মশা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে।

কীটনাশক কেনায় সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলেও কিছু ক্ষেত্রে ‘সিঙ্গেল বিডিং’ লক্ষ্য করা গেছে; একটি কীটনাশক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওপেন টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে তিনটি সিটি করপোরেশনে ১৬টি কার্যাদেশ পায়, যার মধ্যে সাতটিতে তারা বিনা প্রতিযোগিতায় কার্যাদেশ পেয়েছে। কীটনাশক কেনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিম্নমানের কীটনাশক সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। একটি কীটনাশক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে কার্যাদেশে উল্লেখিত দেশ থেকে কীটনাশক আমদানি না করে অন্য দেশ থেকে আমদানি করেছে। উক্ত কীটনাশক আমদানির ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সুরক্ষা উইং থেকে কীটনাশকের নিবন্ধন না নেওয়া। জালিয়াতির মাধ্যমে আমদানি করা নিবন্ধনবিহীন কীটনাশক যথাযথভাবে পরীক্ষা না করেই মশক নিধন কার্যক্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ক্ষেত্রে মশক কর্মীদের ১০০ থেকে ৫০০ টাকা দিলে বাড়িতে গিয়ে ‘অধিক কার্যকর’ ওষুধ স্প্রে করে আসার অভিযোগ রয়েছে।

চলমান পরিস্থিতির উন্নয়নে ২১টি সুপারিশ দিয়েছে টিআইবি। যার মধ্যে রয়েছে মশা প্রতিরোধ ন্যাশনাল ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান প্রণয়ন, বছরব্যাপী মশক নিয়ন্ত্রণ, মশা নিধনে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির ব্যবহার, ডেঙ্গু বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি, মশক নিধন কার্যক্রমে অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডেঙ্গু রোগটি ছিল ঢাকাকেন্দ্রিক। সেটি সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। এটি এখন আর মৌসুমভিত্তিক নেই।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর