ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আবদুর রহমানের পাঁচ দেশে বাড়ির খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার (ছেলুন), দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি ও হুইপ ইকবালুর রহিম এবং মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
গতকাল সংস্থাটির কমিশন সভায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের এ সিদ্ধান্ত হয়। দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট থেকে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ হবে, সেই কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুসরণ করে অনুসন্ধান করবেন।
দুদক সূত্র বলছে, আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বেআইনি কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজ নামে ফরিদপুরের মধুপুরে ভবন নির্মাণ, রাজউকসহ (পূর্বাচল) বিভিন্ন জায়গায় জমি ক্রয়; নিজ নামে মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসি, দি সিটি ব্যাংক পিএলসি এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে সঞ্চয়পত্র কেনার অভিযোগ রয়েছে। তার স্ত্রী মির্জা নাহিদা হোসেনের নামে শান্তা দিগন্ত টাওয়ার, পরীবাগসহ চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন এবং কানাডায় একাধিক বাড়ি ক্রয়ের গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা তিনবারের এমপি। ২০০৮ সালে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল মাত্র ২২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬৬ টাকা। ১৫ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ২০ গুণ।
দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমের দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ নামে ঢাকার উত্তরায় বাড়ি, উত্তরা মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর বাড়ি, ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট, দুটি গাড়ি কেনার তথ্য পেয়েছে দুদক। মাগুরা-১ আসনের সাবেক এমপি মো. সাইফুজ্জামান শেখর নিজ নামে মাগুরা জেলার জাগলা নামীয় স্থানে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে অটোব্রিকস ফিল্ডের ব্যবসা, মাগুরা জেলার চাওলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত নগর পদ্দবিলে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে মৎস্য খামার; তার নিজ নামে ১০টি ট্রাক কেনারও তথ্য পেয়েছে দুদক।
আত্মীয়-স্বজনের নামে গাড়ি, মাগুরায় একাধিক বাণিজ্যিক ভবন, বিভিন্ন জায়গায় অনেক জমি এবং নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ক্রয়ের অভিযোগ রয়েছে শিখরের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, তার শ্যালকের নামে দুটি এবং খালকুড়া নবাবের ছেলের নামে দুটি গাড়ি কিনেছেন। মাগুরা সদরে তার মনোয়ারা কমপ্লেক্স নামে বহুতল মার্কেট রয়েছে।