২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল চট্টগ্রামে দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। অথচ গত অন্তত নয় মাস ধরেই এখানে অতিজরুরি এক্স-রে ফিল্ম নেই। ফলে হাসপাতালে আসা অসহায়-গরিব রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ভর্তি রোগীদেরও প্রাইভেট ল্যাব থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন থাকলেও ফিল্মের অভাবে এর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এক্স-রে ফিল্ম কেনার জন্য যে বরাদ্দ ছিল, নির্ধারিত সময়ে ফিল্ম না কেনায় বরাদ্দকৃত অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত যায়। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন। একইভাবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরেও যথা সময়ে ফিল্ম কেনা হয়নি। ফলে এখন স্থানীয়ভাবে মাঝে মাঝে কিছু ফিল্ম ক্রয় করে জরুরি সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে তা রোগীর তুলনায় অপ্রতুল। এর আগেও বিভিন্ন সময় এক্স-রে ফিল্মের জন্য এক্স-রে করা বন্ধ ছিল।
হাসপাতালের বহিঃবিভাগের রোগী মো. সেলিম বলেন, হাঁটুর ব্যথার জন্য চিকিৎসক দেখালে এক্স-রে করাতে বলেন। কিন্তু বিভাগে গেলে বলা হয়- ফিল্ম নেই, তাই এক্স-রে করা যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ল্যাব থেকে বাড়তি টাকা খরচ দিয়ে করাতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবদুল মান্নান বলেন, গত নয় মাস ধরে হাসপাতালের এক্স-রে করার জন্য ফিল্ম
নেই। এ কারণে রোগীরা কষ্ট পাচ্ছে সেটা আমরা বুঝি। তবে আমি এখানে যোগ দিয়েছি গত সপ্তাহে। যোগ দেওয়ার পরই বিষয়টি শুনে ফিল্মের জন্য ঢাকায় চিঠি দিয়েছি। এ ব্যাপারে অনুরোধ করেছি। সরকারি প্রক্রিয়ায় ফিল্ম আসতে হয়তো একটু সময় লাগছে। আাশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে পেয়ে যাব।
জানা যায়, জেনারেল হাসপাতাল ১৯০১ সালে নগরের আন্দরকিল্লার রঙমহল পাহাড়ের ওপর প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৮৭ সালে হাসপাতালটিকে ৮০ শয্যায়, পরে ১৫০ শয্যায় এবং ২০১২ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও বর্তমানে চলছে ১৫০ শয্যার জনবল দিয়ে। এ হাসপাতালে প্রতিদিন বহিঃবিভাগের এক হাজারের মতো রোগী আসে। তাছাড়া, এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৮০ থেকে ২২০ জন পর্যন্ত রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করে। এর মধ্যে প্রতিদিন অন্তত শতাধিক রোগীকে নানা বিষয়ে এক্স-রে করাতে হয়। কিন্তু এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা এক্স-রে করতে পারছেন না।
বর্তমানে হাসপাতালে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, শিশু, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিকস, চক্ষু, আইসিইউ ও এইচডিইউর অন্তঃ বিভাগ চালু আছে। এখানে আছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট, ১০টি আইসিইউ শয্যা ও আটটি হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ওয়াশিং প্ল্যান্ট ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা।