প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্যের পর নড়েচড়ে বসেছে বিএনপির নেতারা। চট্টগ্রামের কিছু ঘটনায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেছিলেন, ‘আপনারা প্রত্যেকে বিএনপির প্রতিনিধি। মানুষ আপনাদের চেনে বিএনপির একজন নেতা কিংবা কর্মী হিসেবে। আপনি যুবদল, ছাত্রদল কিংবা তাঁতীদল যা-ই হোন না কেন, সবাই আপনাদের চেনে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে। কেন আপনি এমন কিছু করবেন? যার জন্য আপনার আচরণে কিংবা আপনার জন্য দল কিংবা দলের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে তাই সব সময় ভালো আচরণ করুন। সামনে নির্বাচন এলে তার কাছে যেতে হবে, ভোট চাইতে হবে। নিজেকে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে, নিজেকে জনগণের আস্থায় আনতে হবে তাহলেই জনগণের ভোটে জনগণের প্রতিনিধি হতে পারবেন। আস্থা ধরে রাখা দলের নয়, আপনার দায়িত্ব। কারণ আপনি দলের প্রতিনিধি।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশনার পর এখন উজ্জীবিত তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলেন, চট্টগ্রামে এখন উজ্জীবিত বিএনপির নেতা-কর্মীরা। গত দেড় দশক ধরে দলটির নেতা-কর্মীরা হামলা-মামলা, গুম ও খুনের শিকার হলেও রাজপথে সরব ছিল। ওই সময়ে নানা বাধা উপেক্ষা করে সভা-সমাবেশ করেছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনায় দলীয় কর্মসূচি পালন করছে। ব্যতিক্রমী নানা কর্মসূচি নিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে সব ইউনিটে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কৃষকদের কাছে গিয়ে গিয়ে তাদের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছে, সার-বীজ উপহার দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন বলেন, তারেক রহমানের রাজনৈতিক যে দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা- তার প্রমাণ উনি বারবার দিয়েছেন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে উনি সুচারুভাবে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানকে সফল করেছেন। পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থান পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার জন্য তার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বন্যা হোক, দুর্গাপূজা হোক বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে হোক- উনি নিজে কর্মীগোষ্ঠীকে খুব সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন যখন নির্বাচনমুখী পরিবেশের দিকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন যেন কর্মীদের আরও জনসম্পৃক্ত করা যায় এবং বিভিন্নমুখী কর্মসূচি নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাষ্ট্র গঠনে যে কাজগুলো দরকার- সেগুলো তিনি করছেন। এর ফলে কর্মীদের সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা আরও বাড়ছে এবং জনমানুষের কাছে বিএনপির আস্থা নির্ভরতা আরও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চট্টগ্রামের জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজা বলেন, জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট করার মূল উদ্দেশ্য হলো ক্রীড়াঙ্গনে জাগরণ সৃষ্টি করা। বিগত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ দেশের সব সেক্টরের মতো ক্রীড়াঙ্গনও দখল করে রেখেছিল। তারা ক্রীড়ার স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে। যার কারণে দেড় দশকে নতুন কোনো খেলোয়াড় উঠে আসেনি- যেভাবে আসার কথা। আমরা চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে প্রকৃদ ক্রীড়াবিদ, সংগঠকদের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে কাজ করছি। যেন নতুন করে চট্টগ্রাম থেকে আকরাম, তামিম, নান্নু বা আফতাব আহমেদ সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি সব ইভেন্ট ভিত্তিক খেলোয়াড় তৈরি হয়।
বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হলেও রাজপথ ছেড়ে যায়নি। হাজারো বাধা অতিক্রম করে ফ্যাসিস্ট সরকারের দলীয় কর্মসূচি পালন করেছে। শেখ হাসিনার পতনের পর সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনায় দলীয় কর্মসূচি পালন করছে। তবে ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় নতুন পথে এগোচ্ছে নেতা-কর্মীরা। নেতা-কর্মীরা সবাই এখন যার যার অবস্থান থেকে জনসম্পৃক্ততামূলক কাজ করছেন। বিশেষ করে তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে জেলা ও নগরীর প্রায় সব ইউনিটে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কৃষকদের কাছে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে, সমস্যা-সম্ভাবনা ও সার-বীজ উপহার দেওয়া হচ্ছে। ক্রীড়াঙ্গনে নানা ইভেন্ট নিয়েও সরব হয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। এভাবে প্রায় প্রত্যেক সেক্টরে ব্যতিক্রমী সব কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। জনগণের পাশে আগে যেভাবে ছিল, এখন বরং তারচেয়ে বেশি থাকছেন। জনগণের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের মতামতের ভিত্তিতে এলাকাভিত্তিক নানা কর্মসূচি করা হচ্ছে।