চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহন গতকাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক দিন সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করে দেখবেন। চলতি মাসের শেষের দিকে বাণিজ্যিকভাবে এই তেল পরিবহনের কাজ শুরু হবে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) ড. এ কে এম আজাদুর রহমান। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে।
এ কে এম আজাদুর রহমান বলেন, এই প্রকল্পটির কারণে যেমন মহাসড়কে যানজট অনেক কমে যাবে তেমনি অর্থ সাশ্রয়ও হবে। আগামী সাত থেকে ১০ দিন পরীক্ষামূলকভাবে এই জ্বালানি তেল পাইপলাইনে পরিবহন শেষে চলতি মাসের শেষ দিকে এর বাণিজ্যিক পরিবহন শুরু হওয়ার কথা।
জ্বালানি তেল পরিবহনের এই পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে। একটি অংশ চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো এবং আরেকটি অংশ গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত।
পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহনের এই প্রকল্পটি ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে অনুমোদন পায়। শুরুতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু করতেই ২০২০ সাল লেগে যায়। পরে প্রথম দফায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় আবারও ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। বিপিসির এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। শুরুতে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকায়।
বিপিসির কর্মকর্তারা বলছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে সরবরাহ করা হবে ২৭ লাখ টন ডিজেল। পাইপে পরিবহন শুরু হলে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা বছরে ৬৫ লাখ টন। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরবরাহ করা হয়েছে ৬৭ লাখ টন। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশই ডিজেল। ঢাকা বিভাগেই জ্বালানি তেলের ব্যবহার মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ।