বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) প্রকল্প চালিয়ে নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য যা ভালো তাই করছি। আমাদের মোরাল স্ট্রেন্থ এত বেশি, আমরা কাজ শেষ করেই তার পর যাব এবং সে দৃঢ়তা নিয়েই কাজ করছি।’ গতকাল ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বিটিসিএলের প্রকল্প চালিয়ে নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ব্যক্তি স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থেই দুদকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ফয়েজ আহমদ ওই ডিও লেটারে লেখেন, ‘দেশের বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনা করে ফাইভ-জির রেডিনেস পিছিয়ে পড়া রোধ, প্রযুক্তিগতভাবে বিটিসিএলের পিছিয়ে পড়া রোধ, এডিপি বাস্তবায়নের হার নিশ্চিত করা এবং প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিটিসিএলের অপর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এরই মধ্যে স্থাপিত যন্ত্রপাতি চালু করার লক্ষ্যে বিটিসিএল এর ফাইভ-জি উপযোগীকরণে বিটিসিএলের ‘অপটিক্যাল ফাইবার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রাখা একান্ত প্রয়োজন। এ বিষয়ে আপনার মনোযোগ ও সহায়তা কামনা করছি।
চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, প্রকল্পের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল দেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞ কমিটি কর্তৃক যন্ত্রপাতিগুলো ফাইভ-জির উপযোগী কি না এবং পরবর্তী ন্যূনতম ১২ বছরের জন্য সার্ভিস দেবে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে নতুন টেলিকম পলিসি কার্যকর হলে মেয়াদ থাকা অবস্থায় কারও লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, দেশি বিনিয়োগকারীদের নাম করে একদল স্বৈরাচারের দোসর এবং মাফিয়ারা অপতথ্য ছড়াচ্ছে।
প্রস্তাবিত টেলিকম পলিসি কার্যকর হলে আইসিএক্স, আইজিডব্লিউসহ দেশি টেলিকম বিনিয়োগকারীরা বাধাগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করা হচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ অপব্যাখ্যা। কারও লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না। প্রত্যেককে একটা নির্দিষ্ট সময় ১০ বা ১৫ বছরের মেয়াদে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তার লাইসেন্স মেয়াদকালীন লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হবে না। ‘যেটা হবে, সেটা হচ্ছে যেহেতু এ লাইসেন্সগুলো আন্তর্জাতিক স্তরের বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নেই। তাই নতুন লাইসেন্স ব্যবস্থায় এ লাইসেন্সগুলো কনটিনিউ করব না। তখন তাদের নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন লাইসেন্স কিনে নতুনভাবে ব্যবসা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি, যারা নতুনভাবে আবেদন করবে, তাদের অগ্রাধিকার দেব- এটা নতুন পলিসিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে। এর বাইরে আইসিএক্স, আইজিডব্লিউগুলো যারা আছে, যাদের লাইসেন্স ২০২৭ সালের দিকে শেষ হয়ে যাবে; তারা চাইলে আউটসোর্সিং হিসেবে এক্সিস্টিং লাইসেন্সে কাজ করার সুযোগ আছে।
‘সুতরাং এটা সম্পূর্ণ অপব্যাখ্যা যে দেশীয়দের ব্যবস্থা বন্ধ করা হচ্ছে। দেশীয়দের ব্যবসা বন্ধ করা হচ্ছে না। দেশীয়দের নাম করে একদল স্বৈরাচারের দোসর এবং মাফিয়ারা ব্যবসায়ী যারা সিন্ডিকেট তৈরি করছিল, যারা এ সিন্ডিকেট ভাঙতে চায় না এবং যারা এ সিন্ডিকেট ভেঙে নতুনদের টেলিকম ব্যবসায় আসতে দিতে চায় না তারা এ ধরনের অপতথ্য ছড়াচ্ছে বলে আমি মনে করি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. জহিরুল ইসলাম।