চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) আটতলা ভবনে ভয়ংকর অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পুরো ভবন আগুনে পুড়ে কয়লাসদৃশ হয়ে গেলেও রক্ষা পেয়েছে কয়েক হাজার প্রাণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবনটির ওপরের তলায় অগ্নিকান্ডের কারণে নিচে নামতে পেরেছে শ্রমিকরা। যদি কোনো কারণে নিচের কোনো ফ্লোরে এ ঘটনা ঘটত তাহলে ঝরে যেত অনেক নিরীহ শ্রমিকের প্রাণ। ফলে আশপাশের কারখানাগুলো বিল্ডিং কোড নির্দেশনা মেনে করা হয়েছে কি না, অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা আছে কি না তা তদারকি করার ওপর জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় কাজ করা শ্রমিক স্বপ্না আকতার বলেন, আমরা সবাই যে যার মতো কাজ করছিলাম। আগুনের খবর পেয়ে ভবন থেকে বের হয়ে বাসায় চলে যাই। সকালে এসে দেখি পুরো ভবন আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, আমার পরিবারে পাঁচ সদস্য রয়েছে, আমার আয়ের ওপর সবাই নির্ভরশীল। এখন চাকরিটা আর না থাকলেও জীবন নিয়ে যেতে ফিরতে পেরেছি এতেই শুকরিয়া। সোলায়মান নামে শ্রমিক বলেন, আমরা আমাদের ফ্যাক্টরিতে কাজ করছিলাম। এই ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগার খবরে সবাই বের হয়ে এসেছি। এখন আমাদের মনে ভয় কাজ করছে, কোনদিন আবার কোন ভবনে আগুন লাগে। গাদাগাদি করে এমনভাবে ভবন করা হয়েছে, আগুন লাগলেও নির্বাপণের সুযোগ নেই। সাত তলায় আগুন লাগার কারণে ওরা তো বের হতে পেরেছে নিরাপদে, আল্লাহ না করুক নিচে বা দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগলে কি অবস্থা হতো তা নিজের জায়গা থেকে ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। সিইপিজেডে কাজ করা রিমি আকতার নামে এক শ্রমিক জানান, এখন আমাদের ভয় হচ্ছে কখন কী হয়ে যায়। শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার জন্য মালিক ও সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। পাশাপাশি ভবনগুলো সরকারি নির্দেশনা মেনে করা হয়েছে তা যাছাইবাছাই করুক। ভবিষ্যতে যেন কোনো শ্রমিকের জীবন বিপন্ন না হয়। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এ ভবনটির চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) আগুনে ভস্মীভূত কারখানা ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তার কার্যকারিতা সনদ নেই। অগ্নিনিরাপত্তা সনদের জন্য কর্তৃপক্ষ আবেদন করলেও, পরবর্তী ধাপের কার্যক্রম শেষ করা হয়নি। এ ছাড়া ভবনটি নির্মাণে বিল্ডিং কোডের নিয়মও মানা হয়নি। জানা যায়, সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কে অবস্থিত ভবনটিতে আগুন লাগার দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ভবনের সাত তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার কারণে শ্রমিকদের নিরাপদে বের করা সম্ভব হয়েছে।