করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতেই নিয়মিত কাজ করছেন পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের অপারেশনাল কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা! প্রতিদিন চলাচল করছে তেলবাহী ট্যাংক, কন্টেইনার ও খাদ্যবাহী ট্রেন। সারাদেশের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করলেও আন্তঃনগর বা মেইন লাইনে প্রতিদিন চলাচল করছে ৮টি ট্রেন।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাসকৃত মালামালগুলো এসব ট্রেনযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্য সরবরাহ, তেল ও কন্টেইনারবাহী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলো নিয়মিত চলাচল করছে। চট্টগ্রাম বন্দর এবং সিজিপিওয়াই থেকে ফৌজদারহাট হয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ট্রেন চলাচলে মেইনলাইনগুলোর স্টেশন মাস্টার, বন্দরের ইয়ার্ড মাস্টার, ওয়েম্যান ও পয়েন্সম্যানসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত ডিউটি পালন করছেন।
কিন্তু সরকারি বন্ধ ঘোষণা করলেও অপারেশনাল কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের স্বার্থে দায়িত্বপালন করতে ইচ্ছুক হলেও দেয়া হয়নি পর্যান্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী। রয়েছে করোনাভাইরাসের নানাবিধ ঝুঁকি, যাতায়াত সমস্যা এবং খাবার সংকটও। ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তায় ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা রয়েছে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও সিআরবি’র ট্রেন কন্ট্রোলরুমও। এতে ঝুঁকি ও নিরাপত্তা বলয়ের জন্য পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই), প্রয়োজনীয় খাবার এবং যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিনিয়তই শঙ্কার মধ্যে দায়িত্বপালন করছেন এসব দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধের মধ্যেও দায়িত্ব পালনকারী ইয়ার্ড মাস্টার, মেইনলাইনের বিভিন্ন স্টেশন মাস্টার, ওয়েম্যান ও পয়েন্সম্যানদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কারা নেবেন। তারা কি মানুষ নন, এতো ঝুঁকির মধ্যেই অপারেশনার কাজেই নিয়মিত মাঠে বা স্টেশনে চাকরি করতে হচ্ছে। গাড়ি না থাকায় যাতায়াতে সমস্যা, খাবারসহ নানাবিধ সমস্যা সংকট। তারা ডিউটি অবশ্যই করবেন, কিন্তুু নিরাপত্তাও তো দিবে হবে। তবে গার্ডদের জন্য নামেমাত্র কিছু পিপিই দেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) নাসির উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দায়িত্বপালনকারীদের জন্য মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশ এবং সাবানসহ নানা উপকরণ দেয়া হয়েছে। যেহেতু যাত্রী নেই, সেখানে আর কিছু দরকারও নেই। রুমেই বসে দায়িত্বপালন করবেন। পিপিই ও যাতায়াত প্রশ্নে তিনি বলেন, পিপিই ডাক্তারদের জন্যও সংকট রয়েছে। এখানে দরকার কি। যাতায়াতে রেলের স্টাফ এবং আইডি কার্ড দেখালেই তো সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীলরা ছেড়ে দেবেন। কাছেই তো সবার অফিস। তাছাড়া যখন, যেটা প্রয়োজন। সেটা করতে দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা দেয়া রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (ডিটিও) ওমর ফারুক বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যাতে খাদ্যের ঘাটতি না হয় সেজন্য বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন পণ্য আসছে। এতে তেলবাহী বিভিন্ন কন্টেইনার যেমন আছে, তেমনি আসছে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যও। এসব পণ্য খালাস হওয়ার পর ৮টি ট্রেনে করে সারাদেশে পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি বন্ধ ঘোষণা থাকলেও মালবাহী ট্রেনের কারণে বন্দরের ইয়ার্ড মাস্টারসহ মেইনলাইনগুলোতে নিয়মিত বিভিন্ন স্টেশন মাস্টার ও পয়েন্সম্যানসহ অন্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক