কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করার সাথে সাথে দেখা মিলবে স্তুপ স্তুপ খাদ্য সামগ্রীর বস্তার। প্রথম দেখায় যে কেউ এটাকে খাদ্য গুদাম মনে করাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু আরো ভেতরে প্রবেশের পর ভাঙবে খাদ্য গুদামের সেই ধারণার। এখানে ত্রিশের অধিক শ্রমিক বিরামহীন প্যাকেটজাত করতে ত্রাণ। যাতে সহায়তা করছে পুলিশ সদস্যরাও। অসহায় মানুষের কাছ থেকে ফোন পেয়ে পরবর্তিতে ওই ত্রাণের প্যাকেট পুলিশ সদস্যরা পৌঁছে দিচ্ছে নগরীর করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ঘরবন্দি থাকা মানুষের কাছে। কর্মহীন মানুষের জন্য এমন ত্রাণ বিতরণের মহাযজ্ঞ শুরু করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)’র দক্ষিণ জোন। যা চলবে দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত।
সিএমপি’র দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান বলেন, ‘কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রান সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিএমপি’র দক্ষিণ জোন। এরই মধ্যে তিন দফায় প্রায় ১৮০ টন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রান বিতরণ অব্যহত রাখা হবে।’
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হুমায়ন কবির বলেন, ‘পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে এ মানবিক কার্যক্রম শুরু করলেও পরবর্তিতে তাতে যুক্ত হচ্ছেন কিছু মানবিক মানুষ। তাদের আন্তরিক সহায়তা পুলিশের এ কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সাহায্য করছে।’জানা যায়, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশ কার্যত লকডাউন করে দেয়ার পর মানবিক পুলিশের কার্যক্রমের নির্দেশনা দেয় সিএমপি কমিশনার মাহাবুবর রহমান। এরপর ত্রান সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয় দক্ষিণ জোন। প্রথম দফা প্রায় ৬০ টন ত্রান সামগ্রী বিতরণের পর তা মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এরপর কার্যক্রমকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন নানান কর্পোরেট প্রতিষ্টান, ব্যবসায়ীসহ নানান স্তরের মানুষে। এতে করে এ ত্রান কার্যক্রম মহীরু আকার ধারণ করে। বর্তমানে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে তাতে প্যাকেটজাত করা হচ্ছে ত্রান সামগ্রী। ত্রান সামগ্রী প্যাকেটজাত করতে নিয়োজিত রয়েছেন ত্রিশ শ্রমিক। তাদের সহায়তা করছে পুলিশের আরো ৫০ সদস্য। এরই মধ্যে তিন দফায় ১৮০ টন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পুলিশের দেয়া ত্রান সামগ্রীর প্রতি প্যাকেট ত রয়েছে চাল, ডাল, আলু, তেল পেয়াজসহ আট পদের খাদ্য দ্রব্য। যা নিয়ে একটি তিন চার জনের পরিবারের চলে যাবে ১২ থেকে ১৫ দিন। হট নাম্বারে ফোন পেয়ে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দেয়া হচ্ছে ত্রানের প্যাকেট। সামাজিক সম্মানের কথা চিন্তা করে পুলিশও সহায়তা গ্রহণকারীদের পরিচয় গোপন রাখছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার