চট্টগ্রামে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে করোনার প্রার্দুভাব। দিন দিন চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যু এবং আক্রান্তের হারও বাড়ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়ংকর হিসেবে রুপ নিচ্ছে। করোনার রোগীর তুলনায় নেই চট্টগ্রামের কোন হাসপাতালে আইসিও, সিসিও ব্যবস্থাও। এই সংকটে রোগীর স্বজনরা কষ্টের দিনাতিপাত করছেন। অন্যদিকে প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা করোনায় সচেতনতায় মাঠে কাজ করছেন। সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারিদেরও দেয়া হচ্ছে নানা ধরণের শাস্তিও। তবে নিয়ম মেনেই আজ শুক্রবার থেকে চট্টগ্রামে সীমিত পরিসরে খোলা হচ্ছে দোকান-মার্কেটগুলো।
বৃহস্পতিবার সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৬ জনের। শনাক্তের সংখ্য ৪৭৩ জন। সবমিলে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্য ৪৩ হাজারের উপরে এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৪০৬ জন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রামে ২ হাজার ৩৮৬টি নমুনা পরীক্ষা করে এসব শনাক্ত হয়েছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে নগরীতে ৩৯০ জন এবং উপজেলার ৮৩ জন রয়েছেন।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতিতে জনসচেতনতায় প্রতিনিয়ত মাঠে কাজ করছেন প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা। বৃহস্পতিবারও পৃথভাবে ৬টি টিম নিয়ে কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের সচেতনতাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ডে চলমান কাজ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি বলেন, সরকার ও স্বাস্থ্য প্রশাসন মাস্ক পরার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। তাছাড়া সবকিছু বিবেচনা করে দোকান-মার্কেট সীমিত পরিসরে খোলা রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এটি আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।
হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর বাইরে জেলাতেও করোনা সচেতনতায় প্রশাসন কাজ করছেন। হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই সাধারণ মানুষদের মাস্ক নিশ্চিত করণেও কাজ করা হচ্ছে। বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণের মাধ্যমে সচেতনতা বজায় রাখতে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
সীমিত পরিসরে দোকান-মার্কেট খোলাঃ
চট্টগ্রামের বিভিন্ন দোকান ও মার্কেটগুলো সকাল ৯টা - বিকেল ৫টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে খোলা হচ্ছে শুক্রবার থেকে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে বেচাকেনা করতে হবে। শুক্রবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। প্রাথমিকভাবে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত এ সময়সীমা মেনে শপিংমল ও দোকানপাট খোলা যাবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়। তবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এতে গণপরিবহন, শপিংমল, দোকানপাট, বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার তৃতীয় দিনে শর্ত সাপেক্ষে ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন সেবা চালু করে দেয় সরকার।
চট্টগ্রাম জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় গণ-পরিবহন চলাচল করার কথা থাকলেও সরজমিনে দেখা যায় কিছু চালক সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় যাত্রী পরিবহন করছে। একই সঙ্গে মাস্ক না পরার কারণেও দণ্ড দেয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন