তিনি হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের একজন চিকিৎসক। সংক্রমিত হয়েছেন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে। পরীক্ষায় বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার আইসোলেশনে থাকতে তাকে ছুটি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আইসোলেশনে না থেকে দেখছিলেন রোগী। এমন ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে।
জানা গেছে, ওই চিকিৎসকের নাম শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ। তিনি ওই হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট। রবিবার বিকাল পর্যন্ত বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখেন তিনি।
প্রথমে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা বিষয়টি না জানলেও পরে করোনা আক্রান্ত হয়ে রোগী দেখার বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
চিকিৎসকের রোগী দেখার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে বিভিন্ন মন্তব্য শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্থোপেডিক চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ নিয়মিত রোগী দেখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় গত ১৪ জুন চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথের স্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করতে নমুনা দেন। করোনার এন্টিজেন পরীক্ষায় তার স্ত্রীর পজিটিভ আসে। এরপর চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ করোনার এন্টিজেন পরীক্ষা করলে তার নেগেটিভ আসে। কিন্তু ঢাকায় পাঠানো নমুনা পিসিআর ল্যাব রিপোর্টে চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ পজিটিভ হন। এর কিছুদিন পর তিনি আবার এন্টিজেন টেস্ট করালে তার নেগেটিভ আসে। একই নমুনা ঢাকায় পাঠালে গত শনিবার আসা রিপোর্টে চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথের করোনা পজিটিভ আসে।
বিকালে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে গিয়ে দেখা যায়, প্রচণ্ড লোকজনের জটলা। সিরিয়াল অনুযায়ী প্রথমে তার ভিজিটের টাকা পরিশোধ করে রোগীকে রুমের ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। একে একে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৩০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। ফলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন তার কাছে সেবা নিতে আসা রোগীরা।
এসময় ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে আবার পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। আমি তো রোগীদের আগেই সময় দিয়ে রেখেছিলাম। আরও কিছু রোগী আছে। তাদের দেখে আমি চেম্বার বন্ধ করে দিব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে করোনা পজিটিভ নিয়ে একজন চিকিৎসকের চেম্বার করা ঠিক হয়নি।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ডাক্তার শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ করোনা আক্রান্ত থাকায় তাকে আইসোলেশনে থাকতে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তিনি ছুটিতে গিয়ে যদি আইসোলেশনে না থেকে বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র: বাংলানিউজ
বিডি প্রতিদিন/কালাম