চীনের উহানে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর ভাইরাসটি একাধিকবার রূপ পরিবর্তন করেছে। স্পাইক প্রোটিনের মিউটেশনের কারণে করোনাভাইরাস বার বার রূপ পরিবর্তন করে। তবে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি নেই। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) একদল গবেষক এ তথ্য দিয়েছে।
সিভাসু’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের জিন সিকোয়েন্সের মিউটেশন’ শীর্ষক গবেষণায় অংশ গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ডা. ত্রিদীপ দাশ, মলিকুলার বায়োলজিস্ট ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী। গবেষণায় কোভিডের শুরু থেকে এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন সময়ের ৩০০টি নমুনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কাজটি করা হয় ঢাকার ডিএনএ সল্যুয়েশন লিমিটেডের ল্যাবে।
গবেষণায় বলা হয়, নিউক্লিক এসিডের মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের গঠনে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি। স্পাইক প্রোটিনের মিউটেশনের কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে করোনা ভাইরাসের নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়নি। স্পাইক প্রোটিনের এ ধরনের মিউটেশন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।
সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল এসব নমুনার স্পাইক প্রোটিনের জিন সিকোয়েন্স বিশ্লেষণের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য মিউটেশন এবং উচ্চ সংক্রমণ করতে সক্ষম এমন করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্তকরণ।
তিনি বলেন, করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটির বেশ কয়েকবার রূপ পরিবর্তন করেছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলেও ভাইরাসের তিনটি উল্লেখযোগ্য ভ্যারিয়েন্টের (আলফা, বিটা, ডেল্টা) কারণে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের মিউটেশনের কারণে এসব ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ও মৃত্যুহারের ভিন্নতা দেখা যায়। এমনকি নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতিরও সম্ভাবনা থাকে।
গবেষণা সূত্রে জানা যায়, সিভাসু কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবের গবেষকরা গত জুন ২০২০ থেকে জুলাই ২০২১ সাল পর্যন্ত ল্যাবে পরীক্ষাকৃত নমুনা সমূহের মধ্যে ৩০০টি কোভিড-১৯ পজিটিভ নমুনার স্পাইক প্রোটিনের সিকোয়েন্সিং। মিউটেশন বিশ্লেলষণ করে পাওয়া যায় যে, ৬৭টি নমুনার স্পাইক প্রোটিনের মধ্যে মিউটেশন রয়েছে, যার মধ্যে নিউক্লিওটাইডের সিঙ্গেল মিউটেশন হয়েছে ৪৩টি নমুনায়। একের অধিক নিউক্লিওটাইডের মিউটেশন হয়েছে ২৪টি নমুনায়। এসব মিউটেশনের কারণে স্পাইক প্রোটিনের ৪৯টি বিভিন্ন স্থানে এমাইনো এসিডের পরিবর্তন হয়েছে। তবে এর দ্বারা স্পাইক প্রোটিনের গঠনের উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই