১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:১৭

কত মানুষকে চরম দারিদ্র্য বানিয়েছে করোনা, জানাল বিল গেটসের প্রতিষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক

কত মানুষকে চরম দারিদ্র্য বানিয়েছে করোনা, জানাল বিল গেটসের প্রতিষ্ঠান

প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাস, একটি ভয়ঙ্কর ভাইরাসের নাম। এর তাণ্ডবে ইতোমধ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পরপরই এটিকে মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এই মহামারীর প্রকোপে চরম অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিশ্ব। ইতোমধ্যে এই মহামারী বিশ্বজুড়ে ৩ কোটি ১০ লাখ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী কমেছে শিশুদের টিকা দেওয়ার হার।

পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, করোনার আগের চার বছরে দারিদ্র্য বিমোচনে যে বৈশ্বিক অগ্রগতি হয়েছিল, বর্তমানে তা ঠিক বিপরীতে চলে গেছে।

সম্প্রতি বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের পঞ্চম বার্ষিক গোলকিপার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের ৬৩ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে টিকার প্রাপ্যতা, দারিদ্র্য ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে বৈশ্বিক অগ্রগতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে, মহামারী শিশুদের নিয়মিত টিকাদানের হারকে আশঙ্কাজনকভাবে পিছিয়ে দিয়েছে। এছাড়া ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষার ব্যবধান ও স্বাস্থ্যগত বৈষম্য বাড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, টিকা তৈরি ও উৎপাদন এবং জনস্বাস্থ্যের অবকাঠামো বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে হবে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোয়, যেখানে অনেক মানুষ মহামারীর খারাপ প্রভাব এড়াতে পারেনি।

প্রতিবেদন প্রকাশের আগে গেটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মার্ক সুজম্যান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য–প্রচেষ্টার যে অগ্রগতি হচ্ছিল, তা “উল্লেখযোগ্যভাবে” বিপরীত দিকে পরিচালিত করেছে কোভিড। 

কোটি কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার পরিবর্তে আরও ৩ কোটি ১০ লাখ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমরা অন্যান্য সূচকে স্থবিরতা দেখতে পাচ্ছি। পুষ্টি থেকে শুরু করে শিক্ষার কিছু বিষয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই গেছে উচ্চ ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয়।

গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, গত দুই দশকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী বৈশ্বিক জনসংখ্যার হার ৩৭ থেকে ৯-এ নেমে এসেছিল। দারিদ্র্য হ্রাসের এ প্রবণতা থমকে গেছে (প্রতিদিন ১ দশমিক ৯ ডলারে জীবন যাপন করা মানুষকে চরম দরিদ্র হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়)। কোভিডের প্রভাব অব্যাহত থাকায় সামনের বছরগুলোয় এ হার উন্নত হবে না।

সুজম্যান বলেন, চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করা অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের দেশগুলোর। কারণ, এ দেশগুলোর এখনো কোভিডের টিকা দেওয়ার হার ১ শতাংশের কাছাকাছি। আবার ব্যাপকভাবে টিকাদান করা বেশির ভাগ ধনী দেশের মাথাপিছু আয় এ বছর কোভিড–পূর্ব অবস্থায় ফিরে যাবে। এ ছাড়া আগামী বছরও উন্নয়নশীল দেশগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের মাথাপিছু আয় ২০১৯ সালের স্তরের নিচে থাকবে।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

সর্বশেষ খবর