দেশের রফতানি খাতে একের পর এক চমক সৃষ্টি করে চলেছে ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলোতে বাড়ছে ওয়ালটন পণ্যের রফতানি। এরই ধারাবাহিকতায় ইউরোপের পঞ্চম জনবহুল দেশ পোলান্ডে টেলিভিশন রফতানি শুরু করল ওয়ালটন। দেশটির জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘অপটিকাম’-এর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই পোল্যান্ডে টিভির প্রথম শিপমেন্ট পাঠিয়েছে ওয়ালটন। এর ফলে ইউরোপে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
জানা গেছে, ওয়ালটনের ইউরোপ জয়ের লক্ষ্যে শুরু থেকেই ছিল ব্যাপক পরিকল্পনা। দেশের বাজারে শীর্ষস্থান অর্জনের পর ওয়ালটনের পরিকল্পনা ছিল বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করা। পোল্যান্ডে টেলিভিশন রফতানির মধ্য দিয়ে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশে তৈরি ইলেকট্রনিক্স পণ্য রফতানি কার্যক্রম আরও গতি পেল।
সম্প্রতি পোলান্ডের ব্র্যান্ড ‘অপটিকাম’-এর সঙ্গে এ বিষয়ে ওয়ালটনের একটি চুক্তি হয়। রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম, ওয়ালটন টেলিভিশন বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন এবং ওয়ালটনের ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বিজনেস হেড তাওসীফ আল মাহমুদ। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পোলান্ড থেকে যোগ দেন ‘অপটিকাম’-এর সিইও রিচার্ড গ্র্যাবসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ওয়ালটনের ইউরোপিয়ান বিজনেস হেড তাওসীফ আল মাহমুদ বলেন, মধ্য ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত পোল্যান্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার। ৩৮ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ পোল্যান্ড ‘নতুন’ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দেশগুলোর মধ্যে একক বৃহত্তম বাজার। এই রফতানির সুবাদে শুধু পোল্যান্ডই নয়, ইউরোপের অন্যান্য দেশেও ওয়ালটনের পণ্য ব্যাপকভাবে ডিস্ট্রিবিউশন করা সহজ হবে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ পোল্যান্ডের বাজারে ওয়ালটনের তৈরি টেলিভিশন পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ‘অপটিকাম’ পোল্যান্ডে ওয়ালটন পণ্য অনলাইনে বিক্রয় কার্যক্রমেও পার্টনার হিসাবে ভবিষ্যতে কাজ করার আশা প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটন টেলিভিশন বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোস্তফা নাহিদ হোসেন বলেন, পারস্পরিক ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসাবে ‘অপটিকাম’ এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ওয়ালটন। এ ছাড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছরের মধ্যে ইউরোপের বাজারে ১ লাখ ইউনিট টেলিভিশন রফতানির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম বলেন, বর্তমানে আমরা ইউরোপের বাজারে ওয়ালটনের উপস্থিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা তৈরিতে কাজ করছি। এক সময় ওয়ালটনের স্মার্ট টিভি, রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কন্ডিশনারের মতো পণ্য ছাড়াও আইটি, কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ও এলইডি লাইটিং পণ্যও পশ্চিম এবং পূর্ব-ইউরোপজুড়ে পাওয়া যাবে। এই দেশগুলোতে ওয়ালটন পণ্য পৌঁছাতে পোল্যান্ডকে সেতু হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এভাবেই ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি ব্র্যান্ডের কাতারে উঠে আসার লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর জন্য স্মার্ট টিভি তৈরিতে গুগলের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করে ওয়ালটন। সম্প্রতি বাংলাদেশের একমাত্র উৎপাদনকারী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান ডলবি’র লাইসেন্স পায় ওয়ালটন। এর ফলে ওয়ালটন টেলিভিশন বিশ্ববাজারে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ