শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জনপ্রিয় হচ্ছে হাসপাতালের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা

নওগাঁ

নওগাঁ প্রতিনিধি

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হওয়ার পর দেশে প্রথম গত বছর ২৬ মার্চ নওগাঁর মান্দা উপজেলা হাসপাতালে আউটডোরে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা হয়। শুরুতেই অনেকে আশাবাদী ছিলেন না। শঙ্কা ছিল কার্যক্রমের সাফল্য নিয়ে। দিন যেতে যেতে দেখা দিয়েছে এ সেবার সাফল্য। মান্দা উপজেলায় উদ্বোধনের পর থেকে গত ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১৯ হাজার ৯৬০ জন রোগী এ বৈকালিক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ মহিলা ও শিশু। সে সময় হাসপাতালের ১১ জন চিকিৎসক নিজেদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বাদ দিয়ে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়া রোগীদের চিকিৎসা অব্যাহত রেখে দেশের স্বাস্থ্যসেবায় এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এ সেবার সাফল্য দেখা দেওয়ায় চলতি বছর ১৬ আগস্ট জেলার বদলগাছী উপজেলা হাসপাতালে একই কার্যক্রম চালু হয়েছে। সেখানেও দেখা দেয় এই সেবার সাফল্য। এরপর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৪ হাজার ১৩৫ জন রোগী এ বৈকালিক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এরপর সর্বশেষ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় গত ১ অক্টোবর এ সেবার উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি। গত এক মাসে প্রায় বদলগাছী উপজেলা হাসপাতালে ৪০৫ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে মহিলা ও শিশুই অধিকাংশ। সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে এ কার্যক্রমে উপজেলার স্বাস্থ্যবিভাগে চিকিৎসকরা পর্যায়ক্রমে তিনটি উপজেলায় সকাল ও বিকাল আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একজন মহিলা ও একজন পুরুষ ডাক্তার নিয়মিত রোগী দেখেন। শুধু তাই নয়, চিকিৎসাপত্রের পাশাপাশি তাদের উন্নত মানের ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। মান্দা উপজেলা সদরের সমাজকর্মী নজরুল ইসলাম ও পলাশ কুমার জানান, সকালে সরকারি হাসপাতালে চাকরিজীবী, শ্রমিক, নারী, কৃষক, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা নেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু বৈকালিক চিকিৎসাসেবা চালু হওয়ার পর অন্য পেশাজীবীদের পাশাপাশি এসব পেশাজীবী চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। এতে এলাকার সাধারণ রোগীরা উপকৃত হচ্ছেন। পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মিল্টন জানান, গত মাসে এ সেবা প্রথম উদ্বোধন করার পর থেকে অনেক গরিব রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম মোজাহার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কৃষিপ্রধান এ অঞ্চলের মানুষের দিনের শুরুই হয় মাঠের কাজ দিয়ে। গাঁয়ের মেঠোপথ ধরে হাঁটলে চোখে পড়ে ফসলি জমিতে কৃষাণ-কৃষাণির সরব উপস্থিতি। প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কলেজের শিক্ষার্থী, অফিস-আদালতসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সকাল থেকে ব্যস্ত সময় পার করেন বিকাল পর্যন্ত। এ কারণে এই পেশার লোকজনের সময়ের অভাবে সকালে সরকারি চিকিৎসাসেবা নিতে সম্ভব হয়ে ওঠে না। এর ফলে বিকালে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে ব্যাপক টাকা খরচ করতে হয় সাধারণ মানুষকে। এসব মানুষের কথা চিন্তা করে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের পর) নওগাঁর মান্দায় দেশের প্রথম এই সেবা শুরু হয়।

সর্বশেষ খবর