শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

লক্ষ্মীপুরে ছেলে ধরা আতঙ্ক!

উৎকন্ঠায় অভিভাবকরা, সচেতন হওয়ার আহ্বান পুলিশের

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে কয়েকদিন ধরে ছেলে ধরা (শিশু চোর) আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ নিয়ে জেলার সর্বত্র শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎকণ্ঠা। সম্প্রতি ছেলেধরা সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে গণপিটুনি, আটকের ঘটনা লোকমুখে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জেলা পুলিশ বিষয়টিকে গুজব বলে অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সুশীল সমাজ মনে করছে, অপপ্রচারের মাধ্যমে একটি মহল সরকারকে বেকায়দা ফেলতে চাইছে। এখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা দরকার। জানা যায়, লক্ষ্মীপুর পৌর শিশুপার্ক সংলগ্ন এলাকায় গত সোমবার রাত ১০টার দিকে ছেলেধরা সন্দেহে এক নারীকে আটক করা হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর, থানা পুলিশও ছিল ঘটনাস্থলে। সন্দেহভাজন ওই নারীকে প্রথমে পৌর কাউন্সিলরের কার্যালয়ে পরে থানা হেফাজতে পাঠানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকার একটি বাড়িতে উঁকি মারে ওই নারী। এ সময় দুজন পুরুষ দৌড়ে পালিয়ে যায়। ছেলেধরা আতঙ্কে লোকজন চিৎকার দিলে তাকে আটক করা হয়। পরে জানা যায় ওই নারী ছেলেধরা নয়। তার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জে। তিনি রাঁধুনি হিসেবে বিভিন্ন বাসায় কাজ করেন। এক ব্যক্তির আহ্বানে রাতে ওই স্থানে গিয়েছিলেন। এর আগে গত সপ্তাহে সদর উপজেলার মাইলের মাথা নামক স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে বৃদ্ধকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসেবে ছেড়ে দেয় পুলিশ। একইভাবে উপজেলার উত্তর গোপিনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ তুলে দুজনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী। এ সব ঘটনা নিয়ে একটি চক্র অপপ্রচার চালায়। যা ফেসবুক ও লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমছে বলে জানান শিক্ষকরা। শহরের গ্রীন টাচ স্কুল অ্যান্ড কলেজে সন্তান বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অপেক্ষমান একাধিক অভিভাবক জানান, তারা লোকমুখে শুনেছেন বিভিন্ন সেতু নির্মাণে নাকি বলি দিতে হবে। বিষয়টির সত্যতা কি তারা সরকারের কাছে জানতে চান। একই সঙ্গে সব শিশুর নিরাপত্তা দাবি করেন। এমন পরিস্থিতি গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন। তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে ইতোমধ্যে আটক আটটি ঘটনার কোনোটির সত্যতা মেলেনি। এ সব ঘটনায় আটক             সবাই মানসিক বিকারগ্রস্ত বলে মনে হচ্ছে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে।

সর্বশেষ খবর