রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

যত্রতত্র বালু উত্তোলনে গতি বদলাচ্ছে ভোগাই নদীর

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীতে যতযত্র ড্রেজার মেশিন বসিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। এতে নদীর দুই তীরে কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে ভাঙন। নদী হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক প্রকৃতি। তীর ঘেঁষে ও ব্রিজের আশপাশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে কোটি কোটি টাকায় নির্মিত ব্রিজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদী ঘিরে ও আশপাশে গড়ে ওঠা স্থাপনার ঝুঁকিসহ প্রকৃতি ও বৈচিত্র্য হারাবে ভোগাই। নদীটি নাকুগাঁও স্থলবন্দরের পাশ দিয়ে নয়াবিল ইউনিয়ন হয়ে নালিতাবাড়ী পৌর শহরের ওপর দিয়ে মরিচপুরান ইউনিয়নে দুই ভাগ হয়েছে। ভোগাই নদীর দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি ব্রিজ। বোরো মৌসুমে সেচের জন্য স্থাপন করা হয়েছে দুটি রাবার ড্যাম। এর মাধ্যমে নালিতাবাড়ী ও নকলা এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ফুলপুর উপজেলার হাজার হাজার কৃষক সেচ সুবিধা নেন। বহু মানুষ নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ভোগাই নদীর ২৭ একর পরিমাণ বালুমহালটির ইজারা পায় একটি ঠিকদারী প্রতিষ্ঠান। এর পর থেকে বৈধ অবৈধভাবে শত শত ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলা বাড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েক গুণ। প্রশাসন কখনো কখনো ব্যবস্থা নিলেও থামছে না বালু তোলা। এখন নদীর তলদেশ খুঁড়ে ১৫-২০ ফুট নিচ থেকে খনিজ সম্পদ সাদা বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। এতে নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি নদী ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদীটি প্রায় বালুশূন্য হয়ে প্রকৃতি ও জীব-বৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্টের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিবেশ ও নদী সংশ্লিষ্টদের মতে, বালুশূন্য হয়ে ভোগাই নদী বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ছে। নদীতে একেবারে বালু না থাকলে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে নাব্য সংকটের পাশাপাশি পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) আরিফুর রহমান জানান, আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ পর্যন্ত শতাধিক ড্রেজার মেশিন ভেঙেছি। চলতি বছরের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা বাদ দিয়ে ইজারা দেওয়া হয়েছে। নদী বাঁচাতে আগামীতে ইজারা বন্ধ রাখা হতে পারে।

সর্বশেষ খবর