বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বোরো চারায় সবুজ ধানের মাঠ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বোরো চারায় সবুজ ধানের মাঠ

বগুড়ায় ঘনকুয়াশায় বোরোর বীজতলা তৈরির পর সেচ দিয়ে চাষ শেষ করেছে চাষিরা। ভালো ফলনের লক্ষ্য নিয়ে চাষিরা এখন আগাছা পরিষ্কার করছে। জেলার ১২টি উপজেলায় বোরোর চারায় মাঠের পর মাঠ এখন সবুজ হয়ে আছে। কৃষি বিভাগ বলছে জেলায় এবার বোরোর মোট উৎপাদন হবে ৭ লাখ ৭২ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় প্রতি বছর বোরো ধান চাষের পর ভালো ফলন পাওয়া যায়। এই জেলার চাষিরা বোরো ধান চাষে অভিজ্ঞ। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি থেকে বোরোর বীজ জমিতে রোপণ শুরু হয়েছে। পুরো দমে চলতি মৌসুমে চাষ হয়েছে। এ বছর বগুড়া অঞ্চলে শীত বেশি থাকায় বোরোর বীজ তৈরি হয়েছে ঘনকুয়াশার মধ্যে।

এ বছর জেলায় বোরোর চাষ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৫ হেক্টর। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছিল ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ কমে হয়েছিল। চলতি বছরও সমপরিমাণ জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ বছর প্রতি হেক্টরে ফলন পাওয়া যাবে ৫ থেকে ৬ টন করে। এতে ফলন আকারে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে প্রায় ৭ লাখ ৭২ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন। জেলার সদর উপজেলায়, গাবতলী, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ উপজেলাসহ ১২ উপজেলায় বোরো চাষ হয়েছে। সব উপজেলার মাঠে মাঠে এখন সবুজের সমারোহ। চারাগুলো বড় হতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কোথাও শ্যালো মেশিনে আবার কোথাও হাওড় বা নদী থেকে পানি সেচ দিয়ে জমি তৈরি করে বোরো চাষ করেছে চাষিরা। এখন আগাছা পরিষ্কার করে সার ছিটিয়ে ফলনের অপেক্ষা করছে। শেরপুর উপজেলার বোরো চাষি আইয়ুব আলী জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে সেচ দিয়ে বোরো চাষ করা হয়েছে। বোরো চাষের পর আবারও সেচ দিতে হয়েছে। কদিন পর বৃষ্টিপাত না হলে বোরোর জমিতে সেচ দিতে হবে। গত বছর মার্চ মাসে বৃষ্টি হওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছিল। এ বছর মার্চ মাস শেষ হতে চললেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ধুনট উপজেলার ইমরান হোসেন জানান, বোরো চাষ হয়েছে। এখন ভালো হলে ও বাজারে ধানের দাম থাকলে লাভ করা যাবে। কৃষকের ঘর থেকে ধান বের হলে সে ধানের দাম কম হয়। আর ব্যবসায়ীদের আড়তে জমা হওয়ার পর সেই ধান বের হলে ধানের দাম বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ধুনট উপজেলায় বেশ কিছু জমিতে আগামজাতের বোরো ধান চাষ হয়েছে। সদর উপজেলার কয়েকজন বোরো চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার চাষিদের প্রধান চাষ হলো বোরো ধান। সব চাষিই এবার বোরো ধান চাষ শেষ করেছে। মার্চের ১৫ তারিখের মধ্যে বোরোর চাষ হওয়ার পর কেউ কেউ আগাছা পরিষ্কার করেছে। গত বছর ধানের ফলন পাওয়া গেলেও ভালো দাম পাওয়া যায়নি। তারপরও জমি তৈরি করে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. দুলাল হোসেন জানান, বগুড়ায় বোরোর বীজতলা সময়মতো তৈরির পর চাষ হয়েছে। বগুড়া জেলায় বোরোর ভালো ফলন হয়ে থাকে। এবারও আশা করছি ভালো ফলন পাওয়া যাবে। বৃষ্টিপাত না হলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। কৃষকরা ইতিমধ্যে সেচ দিয়ে চাষবাস শেষ করেছে। বগুড়ার কোনো কোনো স্থানে চাষিরা একটু আগেই আবাদ শুরু করেছে। ফলন আকারে এবার চাল প্রায় পৌনে ৮ লাখ মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলনের কোনো সমস্যা হবে না। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বেশ কিছু উপজেলায় বোরোর উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহারের কারণে ফলন বেড়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর