রবিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল

ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি

হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল

আধুনিকতার ছোয়ায় গ্রাম থেকে কাঠের তৈরি বাঁশের হাতলের লাঙল বিলুপ্তির পথে। আগের মতো গরুর হাল লাঙল দিয়ে কৃষকদের জমি চাষ করতে এখন আর চোখে পড়ে না। এক সময় জমি চাষের জন্য কৃষকের অন্যতম প্রধান উপকরণই ছিল কাঠের লাঙল দিয়ে হালচাষ পদ্ধতি। লাঙল ব্যবহার করে কৃষকরা তাদের জমি প্রস্তুত করতেন ফসল লাগানোর জন্য। ডোমার উপজেলার কেতকীবাড়ি  কৈমারীপাড়া গ্রামের কৃষক মকলেছ আলীর বাড়িতে বাঁশের হাতল কাঠের লাঙল, জোয়াল ও মই এখনো বিদ্যমান রয়েছে। কৃষক মকলেছ বলেন, আগেরমতো এখন আর গরুর হালের ডাক পড়ে না। কোনো জমি মেশিন দিয়ে চাষ করতে ছাড়া পড়লে তখন তাঁকে কদর করে ডাকা হতো জমি চাষ করে দিতে। এখন তো পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টরের কারণে লাঙলের হালচাষ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই লাঙল, জোয়াল ও মইয়ের কদর কমে গেছে। আধুনিক সোয়ায় কৃষকরা এখন আর গরু-মহিষের হাল দিয়ে জমি চাষ করতে লাঙল ব্যবহার করেন না। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জমি চাষের আধুনিক যান্ত্রিক সব উপকরণের ব্যবহার শুরু হয়েছে। কৃষকরা জমিতে লাঙলের পরিবর্তে পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর ব্যবহার করছেন। এ সব যান্ত্রিক উপকরণ দিয়ে জমি চাষ করে মুহূর্তের মধ্যে জমি চাষ করে প্রস্তুত করা হয়। জমিতে ফসল লাগানো যায়। তবে কাঠের লাঙল দিয়ে জমি চায় করলে সময় বেশি লাগলেও জমিতে উর্বর শক্তি বেশি বৃদ্ধি পায়। এক সময় গ্রামের প্রতিটি ঘরের কৃষকরা কাক ডাকা  ভোরে হালের গরু লাঙল জোয়াল নিয়ে জমি চাষ করতে যেত। লাঙল দিয়ে জমি চাষে করতে করতে কৃষকরা মনের আনন্দে গান গাইত। কৃষাণের বধূরা গামলায় করে পানতা ভাত নিয়ে যেত। সেই অপরূপ দৃশ্যগুলো গ্রাম থেকে একেবারেই হারিয়ে যাচ্ছে। সেই জমি চায়ের কাঠের লাঙল আজ গ্রাম থেকে বিলুপ্তির পথে। এক সময় কাঠের লাঙলের খুবই কদর ছিল। কারিগররা বিভিন্ন গাছের গুঁড়ি দিয়ে  তৈরি করত লাঙল। হাট-বাজারগুলোতে প্রচুর লাঙল বিক্রির চাহিদা ছিল। আগের মতো চাহিদা না থাকায় লাঙল তৈরির কারিগররা পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেছেন। আগের মতো হাট-বাজারগুলোতে লাঙল বিক্রি করতে দেখা যায় না।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর