রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শিক্ষার আলো বঞ্চিত চরাঞ্চলের শিশুরা

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

শিক্ষার আলো বঞ্চিত চরাঞ্চলের শিশুরা

সিরাজগঞ্জের চৌহালীর চরাঞ্চলের চার গ্রামের শত শত শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নদী ভাঙনের কারণে স্থানীয় পয়লা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে ওই এলাকায় আবার চর জাগলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পুনঃস্থাপন করা হয়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর ও অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট দফতরে বিদ্যলয়টি পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। স্কুলটি চরাঞ্চলে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আদালতে মামলাও করা হয়েছে। পয়লা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুল হালিম জানান, ১৯৬৭ সালে উমারপুর ইউনিয়নের পয়লা গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তার বাবার জমিতে নির্মাণ করা হয়। স্কুলটিতে পয়লাসহ চারটি গ্রামের ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করত। ২০০০ সালে যমুনা নদীর ভাঙনে স্কুলসহ গ্রামগুলো বিলীন হয়ে যায়। গ্রামের মানুষ বিভিন্ন স্থানে চলে যান। পরবর্তীতে যমুনার পূর্বপাড়ে চরসলিমাবাদ স্কুলটি অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গত ১০ বছর আগে পুনরায় পয়লাসহ চারটি গ্রাম জেগে ওঠায় সেখানে নতুন বসতি গড়ে ওঠে। বর্তমানে চারটি গ্রামে প্রায় দেড় হাজার পরিবার বসবাস করছে। স্কুলটি চর সলিমাবাদেই চার গ্রামের শিক্ষার্থীরা উত্তাল যমুনা নদী পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। অনেকেই পড়াশোনা বাদ দিয়ে খেত-খামারে কাজ শুরু করছে। স্কুলটি পয়লা গ্রামে পুনঃস্থাপনের জন্য প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষা অফিস বরাবর আবেদন করা হয়। আবদুল হালিম বলেন, চরাঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য স্কুলটি পুনঃস্থাপনের স্বার্থে আদালতে মামলাও করা হয়েছে। তারপরও সিরাজগঞ্জ জেলার স্কুল টাঙ্গাইলে স্থাপনের জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল কাদের মোল্লা জানান, বর্তমানে যেখানে স্কুলটি স্থাপনের চেষ্টা চলছে সেখানে আধ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অথচ চরাঞ্চলে একটি স্কুলও নেই। ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মন্ডল জানান, স্কুলটি পয়লা গ্রামে পুনর্¯’াপন হওয়া জরুরি। উপজেলা শিক্ষা অফিস বরাবর আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষকসহ কিছু লোক বিদ্যালয়টি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদে স্থাপন করার পাঁয়তারা করছেন। প্রধান শিক্ষক গোলাম হোসেন বলেন, চরে মাত্র ১২ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। আর এপার রয়েছে ১১৩ জন। এ কারণে স্কুলটি চরে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে চরে নিতে হবে তবে আমার কোনো সমস্যা নেই। চৌহালী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ জানান, স্কুলটি কোথায় পুনঃনির্মাণ করা হবে এ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

সর্বশেষ খবর