শিরোনাম
শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

পর্যটকে মুখর চলনবিল

আগত পর্যটকরা কক্সবাজারের আদলে উপভোগ করেন

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর

পর্যটকে মুখর চলনবিল

যান্ত্রিক জীবনের প্রশান্তি আনতে চলনবিলে নৌকা ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে পর্যটকের। চলনবিলের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা এবং ভরা বর্ষায় নির্মল বিনোদনের জন্য এখানে ভিড় করছেন ভ্রমণপিপাসুরা। বিশাল জলরাশির উত্তাল ঢেউ, বিশুদ্ধ বাতাস, শ্রাবণের জোসনা, মেঘ-রৌদ্দুর খেলা, ডিঙি নৌকায় মাছ ধরা, পিকনিক পার্টির নৌকায় উন্মাদনা ইত্যাদি উপভোগ করা যায় চলনবিলে। এর এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে খুবজীপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘চলনবিল জাদুঘর। এই জাদুঘরে রয়েছে চলনবিলের হাজার বছরের কৃষ্টি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের দর্শন। বর্তমানে জাদুঘরটি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। পাশের সিংড়া উপজেলায় আছে ঘাসি দেওয়ানের মাজার। তাড়াশ উপজেলায় রয়েছে জমিদারবাড়ি। নওগাঁয় রয়েছে শাহ্ শরীফজিন্দানীর (র.) মাজার শরীফ। আর নাটোর সদরে অবস্থিত উত্তরা গণভবনসহ রানী ভবনীর স্থাপনা। এসব ঘিরে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে পর্যটকের। গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তমাল হোসেন বলেন, এশিয়ার বড় বিল চলনবিল। দেশের নানা প্রান্ত থেকে বর্ষায় চলনবিলের নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে আসেন মানুষ। একসময় পর্যটকদের বসার জায়গার অভাব, গাড়ি পার্কিং, আলোসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না থাকায় ভ্রমণ উপভোগ্য ছিল না। পর্যটকের এসব সুবিধা নিশ্চিত করে গড়ে উঠেছে স্বর্ণদ্বীপসহ কয়েকটি বিনোদন স্পট। এগুলো হয়েছে ব্যক্তি উদ্যোগে। আগামীতে পর্যটকদের সব সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে। সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, চলনবিলের থইথই পানিতে মাটি ফেলে উঁচু করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে ঘর। বসার জন্য রাখা হয়েছে চেয়ার-টেবিল। রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য টেবিলে বসানো হয়েছে ছাতা। রয়েছে চা-কফিসহ নানা খাবার। টয়লেট সেবাও আছে। বৃষ্টির সময় এসব ঘরের বারান্দায় আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। মূল সড়ক থেকে বিনোদন কেন্দ্রে চলাচলের জন্য প্রায় ৩০০ মিটার বাঁশের সেতু তৈরি করা হয়েছে। কথা হয় ঘুরতে আসা আনারুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, পপি আক্তারসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তাদের ভাষ্য, উপজেলায় বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। কর্মব্যস্ত দিন কাটে। শেষ বিকালে একটু প্রশান্তির জন্য চলনবিলে আসি। ক্লান্ত ঝেরে ফেলে ফ্রেশ হয়ে বাড়ি ফিরি। স্থানীয় খুবজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম জানান, ২০১০ সালে স্থানীয় এমপি আবদুল কুদ্দুস গুরুদাসপুর-তাড়াশ পর্যন্ত চলনবিলের মাঝখান দিয়ে পাকা সড়ক ও সেতু নির্মাণ করেন। এরপর থেকেই স্থানীয় লোকজনসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ চলনবিল দেখতে আসছেন। তাদের সুবিধার জন্য সেতু ও বিনোদন কেন্দ্রে ২৫টি সোলার প্যানেল, বসার জায়গা, গাড়ি পার্কিং-নিরাপত্তাসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের সমাগম ঘটে এখানে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর