শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

খাল দখলে নাটোরে জলাবদ্ধতা

নাটোর প্রতিনিধি

খাল দখলে নাটোরে জলাবদ্ধতা

খালের জায়গায় গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অবৈধ দখলে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে নাটোরের সরকারি খালগুলো। প্রভাবশালীরা বিভিন্ন সময়ে খাল দখল করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ স্থাপনা। কেউ কেউ খালের জমি নিজের নামে রেকর্ড করে তা বিক্রিও করেছেন। দখলের কারণে খালের আয়তন কমে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বর্ষা মৌসুমে জেলা শহরের বড় অংশজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সূত্র জানায়, নাটোর শহরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম চিতলগাড়ি ও ভুসিখালী খাল। দখল আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এক সময়ের খরস্রোতা খাল দুটি এখন মৃতপ্রায়। তাছাড়া দুই পাড়ের বাসিন্দারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে সংকুচিত করে ফেলেছেন খাল। ফলে বৃষ্টি হলেই শহরের নিচু এলাকায় জমে যায় পানি। ভোগান্তির শিকার হন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় রসুলের মোড় এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গায়ের জোর খাটিয়ে খালের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন কিছু ব্যক্তি। আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে উল্টো আমাদের মামলা-হামলার ভয় দেখানো হয়। তদের অভিযোগ, খালের মুখ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি আমাদের বসতবাড়িসহ চাষের জমিতে প্রবাহিত হয়। এতে একদিকে যেমন সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, অপরদিকে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হয়। কয়েকবার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও প্রতিকার পাইনি। নাটোর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদুর রহমান জাহিদ বলেন, খালগুলো যে যেভাবে পারছেন, দখল করে নিচ্ছেন। কেউ জায়গা দখল করছেন, কেউ সাইনবোর্ড দিচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে খালের অস্তিত্ব থাকবে না। নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজের উদ্যোগে ভুসিখালী ও চিতলগাড়ি খালের একাংশ উদ্ধার করা হলেও এখন তা আবার দখলের পাঁয়তারা চলছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও কেউ মানছে না। জলাবদ্ধতা নিরসনের স্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ জানান, দ্রুততম সময়ের মধ্যে খাল ও নদীর অবৈধ দখল ছেড়ে দিতে হবে। তা না হলে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নাটোর শহরের রসুলের মোড় থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত চিতলগাড়ি ও ভুসিখালী খাল আবর্জনায় ভরা। বন্ধ রয়েছে পানিপ্রবাহ। খালের পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বসতঘর। খালের যেটুকু অংশ বাকি ছিল, তাও দখলের জন্য মাটি ফেলা হচ্ছে। খালটি দখল হয়ে গেলে রসুলের মোড়, উত্তর চৌকিরপাড়, কালুরমোড়, রথবাড়ি এলাকার ৩ হাজার পরিবার স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর