অর্থ ও জনবলসংকটে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। অর্থসংকটে বিশেষায়িত বিভাগ সিসিইউ ৮ মে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। টানা নয় মাস ৩০ জন চিকিৎসকসহ ১৩০ জন কর্মচারী বিনা বেতনে সেবা দিয়ে চালু রেখেছিলেন এ বিভাগ। বিষয়টি ৫ মে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবাধয়ক ডা. মং টিং ঞো। ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালের আইসিইউ, সিসিইউসহ কয়েকটি বিভাগ এনজিওর অর্থের ওপর নির্ভরশীল। গত জুনে এনজিও প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিন মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালানো হয়। এর পর থেকে বিনা বেতনে অনেকেই কাজ চালিয়ে গেছেন নতুন প্রকল্প আসবে এ আশায়। নানান জটিলতায় এখনো প্রকল্প আটকে আছে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ চাকরি ছেড়েছেন। এ অবস্থায় চিকিৎসকের অভাবে সিসিইউ বিভাগ বৃহস্পতিবার বন্ধ হয়ে গেছে। আইসিইউ এখনো চালছে বিনা বেতনে। তা-ও বন্ধ হতে পারে যে কোনো সময়।
এ ছাড়া হাসপাতালে সরকারি মঞ্জুরি ৩২৮ পদের মধ্যে ৭৬টি শূন্য রয়েছে। জরুরি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫ শতাধিক রোগী আসেন। মাত্র তিনজন চিকিৎসক এখানে সেবা দিচ্ছেন। ন্যূনতম সেবা চালু রাখতে হলেও জরুরি বিভাগে অন্তত ১২ জন চিকিৎসক প্রয়োজন। ২৫০ শয্যার হলেও হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০ রোগী ভর্তি থাকেন। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, ‘প্রকল্প বন্ধ হওয়ার পর ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অপারেটিং (আইএসও) নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার নতুন প্রকল্প অনুমোদনের আশ্বাস পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-কর্মচারীর সঙ্গে আলোচনা করে আইসিইউ, সিসিইউসহ বিশেষায়িত বিভাগগুলো চালু করা হয়। যেখানে ৩০ জন চিকিৎসক ও ১০০ জন কর্মচারী ছিলেন।’
কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সদর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দ অর্থে আন্তর্জাতিক ও দেশি বিভিন্ন এনজিও জেলাব্যাপী হাসপাতাল ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে আসছে ২০১৯ সাল থেকে। এতে কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগে সরকারিভাবে নিয়োগ করা জনবল ছাড়াও সদর হাসপাতালে ১৯৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী পদায়ন করা হয়েছিল। যার অধীনে হাসপাতালটিতে চালু করা হয়েছিল আইসিইউ, সিসিইউ, জরুরি প্রসূতি এবং শিশুরক্ষা সেবা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয় ২০২৪ সালের জুনে। তখন বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সরকারি প্রচেষ্টায় প্রকল্পের মেয়াদ তিন মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছিল।