রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পদ্মায় জেগেছে একাধিক চর, হারাচ্ছে নাব্য

সদর উপজেলার জৌকুড়া এলাকায় পদ্মায় জেগে ওঠা চর

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

পদ্মায় জেগেছে একাধিক চর, হারাচ্ছে নাব্য

বর্ষার প্রমত্তা পদ্মা এখন রূপ নিয়েছে মরুভূমিতে। পদ্মার রাজবাড়ীর বেশির ভাগ অংশে জেগে উঠেছে বড় বড় চর। পদ্মা কখনো খরস্রোতা আবার কখনো হাঁটুপানি- এ গল্প সবার জানা। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাল মেলাতে পারছে না এককালের প্রমত্তা এই নদী। পদ্মা জৌলুস হারিয়ে ক্রমেই অচেনা রূপ ধারণ করছে। রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর অধিকাংশ স্থান পানিশূন্য হতে শুরু করেছে। বালুর স্তরে আটকে যাচ্ছে নৌযান। বিশাল চরে এখন বিচরণ করছে গরু-মহিষ। চর পদ্মাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। এক পাশে রাজবাড়ী অন্য পাশে পাবনা জেলার অংশ। পদ্মায় রাজবাড়ী অংশের চ্যানেল দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে নৌযান। নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অনেক জায়গায় ড্রেজিং করছে বিআইডব্লিউটিএ। বর্ষা মৌসুমে পানিতে পদ্মা ভরে থাকলেও তখন নদীর তীরে ভাঙন ও বন্যা দেখা দেয়। আর শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুকে ছোট-বড় মিলে অসংখ্য চর জেগে উঠে। গতকাল দুপুরে রাজবাড়ীর সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে রূপ পাল্টানো পদ্মা নদী। অনেক জায়গায় পানি নেই। বড় বড় চর যেন বিশাল বালুরাশি। বালুতে আটকে যাচ্ছে মাঝিদের নৌকা। পদ্মার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এপারে আসছেন সাধারণ মানুষ। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ছোট দুটি ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অব্যাহত ড্রেজিং করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যে কোনো সময় বন্ধের শঙ্কা রয়েছে ফেরি চলাচল। রাজবাড়ী অংশের ছোট চ্যানেল দিয়ে আসা-যাওয়া করছে ছোট ছোট নৌযান। ড্রেজিং অংশ দিয়ে নৌযান চলাচল করায় তীর ভাঙছে। বিলীন হচ্ছে কৃষকের ফসলি জমি। স্থানীয় মিজানপুর ইউনিয়নের হাসেন আলী (৭৮) বলেন, সেই পদ্মা এখন আর নেই। বর্ষার কয়েক মাস পদ্মায় পানি থাকে। আর সব সময় পদ্মায় থাকে বড় বড় চর। এ নদীর রূপ পাল্টে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের পাশাপাশি অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে আজ পদ্মার এই দশা। গোয়ালন্দের অংশে পদ্মার নাম হয়েছে ‘মরা পদ্মা’। পদ্মার মাঝখানে শত শত চর জেগেছে। তিনি বলেন, এটি-তো পদ্মার আসল রূপ নয়। নদীকে তার মতো বয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। না হলে নদী আরও আগ্রাসী হবে। বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (পোর্ট ও ট্রাফিক বিভাগ) আরিফ উদ্দীন বলেন, পদ্মায় অনেক চর পড়েছে। রাজবাড়ীসহ পাবনা জেলার মানুষের যোগাযোগ সহজ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার জৌকুড়া এলাকায় নাব্য সংকট রয়েছে। নাব্য সংকট দূর করতে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াই লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর