শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নিম্নমানের পিঁয়াজ বীজে বাজার সয়লাব

প্রতারণার শিকার কৃষক

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ফরিদপুরের বাজারগুলো নিম্নমানের পিঁয়াজ বীজে সয়লাব। এসব বীজ কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন কৃষকরা। তারা জানান, এ বীজে কোনো ফলন হয় না। বীজ থেকে যে পাতা বের হয় তা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অভিযোগ আছে, দেশীয় পিঁয়াজ বীজ না কিনে বিএডিসির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ভারতীয় বীজ কিনে তা প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করছেন। তাছাড়া অনেক বীজ ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় চোরাইপথে ভারতীয় নিম্নমানের বীজ এনে তা দেশীয় বীজের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করছেন। ফলে আগামী মৌসুমে দেশে পিঁয়াজ বীজ উৎপাদনে ধস নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতীয় পিঁয়াজ বীজের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় পিঁয়াজ বীজ চাষিরা। এ অবস্থায় ফরিদপুরের দেড় শতাধিক পিঁয়াজ বীজ চাষি আগামীতে বীজ আবাদ করবেন না বলে জানিয়েছেন। বীজ উৎপাদনকারী চাষি, স্থানীয় কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা দেশের মধ্যে ৮০ ভাগ পিঁয়াজ বীজ উৎপাদিত হয় ফরিদপুর জেলায়। এ জেলার বীজ উৎকৃষ্টমানের এবং ফলন বেশি পাওয়া যায়। ফলে এখানকার বীজের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। গত বছর ফরিদপুরে রেকর্ড পরিমাণ পিঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছিল। এ বছর বীজ লাগানোর মৌসুমে ভারতীয় নিম্নমানের বীজ দখল করে নিয়েছে বাজার। দেশীয় বীজের তুলনায় দাম কম থাকায় অনেক কৃষক না বুঝেই এ বীজ কিনছেন। জানা গেছে, দেশীয় বীজের দাম প্রতি কেজি ৩ হাজার টাকা। আর ব্যবসায়ীরা ভারতীয় বীজ কিনে আনছেন প্রতি কেজি ৪০০-৫০০ টাকায়। এসব বীজ বিক্রি করা হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ফরিদপুর জেলার একাধিক বীজ ডিলার বিভিন্নভাবে ভারতীয় প্যাকেটবদ্ধ পিঁয়াজ বীজ এনে তা দেশীয় বীজের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করছেন। বিভিন্ন স্থানের কৃষক এসব বীজ কিনে খেতে লাগাচ্ছেন। এ ছাড়া সরকারের প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের মধ্যে দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় নিম্নমানের বীজ। পিঁয়াজ বীজ চাষিদের অভিযোগ, বিএডিসির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ভারতীর বীজ কেনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সদর উপজেলার অম্বিকাপুরের সাহিদা বেগম, সোহরাব মণ্ডল, ভাষানচরের আলমাস, ভাঙ্গা উপজেলার ইছাহাক মোল্লা, সদরপুরের জুলহাসসহ একাধিক চাষি অভিযোগ করেন, ভারতীয় পিঁয়াজ বীজে বাজার সয়লাব হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই। তাদের দাবি, অনেক কৃষক না বুঝে এবং দাম কম থাকায় এ বীজ কিনে খেতে লাগাচ্ছেন। ফরিদপুর বিএডিসি (বীজ) কর্মকর্তা সফিকুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। জেলা কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর