রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মেঘনায় অবৈধ বালু তোলার হিড়িক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মেঘনায় অবৈধ বালু তোলার হিড়িক

আশুগঞ্জে ড্রেজার দিয়ে তোলা হচ্ছে বালু

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ইজারার নিয়ম না করে মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। প্রতিদিন প্রায় ২০টি ড্রেজার দিয়ে নদীর চর ঘেঁষে বালু তোলা হয়। আবার সুযোগ বুঝে ড্রেজার লাগিয়ে চরের ফসলি জমি পর্যন্ত কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে ভাঙনের সৃষ্টির পাশাপাশি নদী তীরবর্তী চরলালপুর গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। জানা যায়, সম্প্রতি আশুগঞ্জ উপজেলার চরলালপুর ও নবীনগরের চর কেদারখোলা বালুমহাল দুটি ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। দুটি বালুমহালেরই ইজারা পেয়েছেন মেসার্স মৌসুমী ড্রেজিং সার্ভিস। চরলালপুরে ইজারায় উল্লিখিত এলাকা বাদ দিয়ে চর ঘেঁষে বালু উত্তোলন শুরু করেন ইজারাদার। এমনকি ড্রেজার লাগিয়ে তারা মেঘনা চরের ফসলি জমির মাটি কেটে নিতে থাকেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট জমির বন্দোবস্ত পাওয়া ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সরেজমিন দেখা যায়, লালপুর বাজারের কাছে মেঘনার চর ঘেঁষে ২০টি ড্রেজারের সাহায্যে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে চরের বিরাট অংশের ফসলি জমি কেটে ফেলা হয়েছে। কাটা অংশে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙন। স্থানীয়রা জানান, এভাবে চর ঘেঁষে বালু তুলতে থাকলে অল্প সময়েই একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। ভূমিহীন চাষি ও গ্রামবাসী জানান, ইজারা পেয়ে বালু উত্তোলন শুরুর পর দু-এক দিন তাদের সীমানায় ছিল। এরপর থেকেই তারা চর ঘেঁষে বালু তুলতে থাকে এবং রাতবিরাতে ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়। বাধা দিলে ইজারাদারের পক্ষ থেকে মামলার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। চরে বন্দোবস্ত পাওয়া কৃষকরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে আদালতের শরণাপন্ন হলে বিষয়টি সরেজমিন দেখতে অ্যাডভোকেট কমিশন গঠন করা হয়। শুক্রবার কমিশনের অ্যাডভোকেট রুহুল বাসার খান জসীম সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, বালুুমহালের সীমানা অতিক্রম করে ইজারাদার চরের ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে। ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সৈয়দ ইব্রাহীম আহমেদ বলেন, বালুু মহালের সীমানা অতিক্রম করে ইজারাদার চরের জমির মাটি কাটার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। ইজারাদার মোশারফ হোসেন মিন্টু বলেন, ড্রেজারগুলোকে নির্ধারিত সীমানার মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছি। কারও ক্ষতি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আশুগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, কোনো ফসলি জমির ক্ষতি হলে তদন্ত করে দেখা হবে।

সর্বশেষ খবর