সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত তিন শিক্ষকের বেতন ফেরতের নির্দেশ

নীলফামারী প্রতিনিধি

অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা ডিগ্রি কলেজ। পদ নেই তবুও ভুয়া পদে একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা। এদিকে তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় ৩য় শিক্ষকের উত্তোলিত বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়ায় থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ায় ঘটনা ধামাচাপা দিতে জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতের দারস্থ হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তিস্তা ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে তৃতীয় কোটায় ভৃগুরাম চক্রবর্তী, আনোয়ারুল ইসলাম এবং অধ্যক্ষ সৈয়দ আলী তার শ্যালকের স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়োগ দেন এবং অবৈধভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর রংপুর অঞ্চল, রংপুর অফিস থেকে এমপিওভুক্ত করানো হয়। সূত্র জানায়, ভৃগুরাম চক্রবর্তীর ফাইল একাধিকবার ‘ল্যাক অব কোয়ালিফিকেশনের কারণে সর্বশেষ গত ৩০ মে ২০২০ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা রংপুর থেকে ৩য় বারের মতো বাতিল হওয়ার পরে আলৌকিকভাবে আবার ওই মাসে এমপিও লিস্টে তার নাম আসে। এদিকে গত ২০২১ সালের ৪ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক (কলেজ-২) এনামূল হক হাওলাদার স্বাক্ষরিত পত্রে ভৃগুরাম চক্রবর্তীসহ উল্লিখিত ওই ৩ শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করে এমপিও বাবদ উত্তোলিত বেতন-ভাতার অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। দীর্ঘদিনেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

সূত্র জানায়, ভৃগুরাম চক্রবর্তী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে যে সনদ দিয়ে চাকরিতে যোগদান করেন সেটিও ভুয়া। কারণ ২০১০ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন না বলে গত ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ইং সরকারি প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়। এ ছাড়া ভৃগুরাম চক্রবর্তীকে নিয়োগ প্রদানের মাত্র সাতদিন আগে বাংলা বিভাগে ৩য় শিক্ষক হিসেবে জনৈক এনামূল হক নামের অপর একজনকে নিয়োগ দেওয়া হলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভৃগুরাম চক্তবর্তীর নাম এমপিও লিস্টে পাঠানো হয়। যা পরবর্তীতে স্থগিত হয়ে যায়। এ ছাড়া ভৃগুরাম চক্রবর্তী ১৯৯৮ সালে এসএসসি, ২০০৫ সালে এইচএসসি, ২০০৯ সালে অনার্স ও ২০১০ সালে এমএ পাস করার বিষয়টি আমলে নিয়েই এমপিও তালিকা থেকে তার ফাইল বাতিল করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ সৈয়দ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভৃগুরাম চক্রবর্তী ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার নিয়োগ ও যোগদানপত্রের বিষয় পরিবর্তন করে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেছেন। যা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মহাপরিচালক, মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয়ভাবে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর