মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বগুড়ায় বন্ধ ৩০ নৌরুট

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় বন্ধ ৩০ নৌরুট

বগুড়ায় যমুনা নদীতে বন্ধ হয়ে গেছে ৩০ নৌপথ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। বগুড়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনার বুকে এখন ধু ধু বালু। মাইলের পর মাইল হেঁটে চরে বসবাসরত মানুষকে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, শিক্ষার আলো, স্বাস্থ্যসেবা, সড়ক যোগযোগ প্রায় সব ধরনের নাগরিক সেবাবঞ্চিত যমুনা চরের বাসিন্দারা। বালুর মাধ্যে চাষাবাদ এবং গরু-ছাগল পালন এদের প্রধান পেশা। এখন অনেক চরে মরিচ, আলু, বাদাম, গম, ভুট্টাসহ নানা ফসল আবাদ হয়। শুষ্ক মৌসুমে ফসল নিয়ে নদী পাড় হতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় চাষিদের। পলি ও চরের কারণে বর্ষা মৌসুমে সামান্য ঢলে নদী পরিপূর্ণ হয়ে অকাল বন্যা দেখা দেয়। বন্যার পরই নদীতে নতুন নতুন চর জেগে উঠায় নৌকা চলাচল করতে পারে না। ফলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজার সরবরাহ করা যায় না। আবার জরুরি প্রয়োজনে হাট-বাজার, অফিস-আদালত, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজে সময়মতো পৌঁছা দুরূহ হয়ে পড়েছে। নদীর নব্য কমে যাওয়ায় চরে মানুষ বসবাস করা কঠিন হয়ে গেছে। নদীতে চলছে না নৌকা, আবার ধু ধু বালুতেও চলছে না কোনো যানবাহন। মাইলের পর মাইল তপ্ত বালুতে হেঁটে পথ চলতে হচ্ছে। জানা যায়, ১৯৯৮ সালের পর থেকে যমুনার উজানে নদী ভরাট হয়ে চর জাগতে শুরু করে। এখন যমুনা সেতুর উজানে সিরাজগঞ্জ থেকে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ২৩০ কি.মি নদীতে ছোটবড় চরের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এক সময়ের প্রমত্তা যমুনা এখন নাব্য হারিয়ে বিভিন্ন রুটে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, যমুনায় এ পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো কোনো খেয়াঘাট সরিয়ে নিতে হয়েছে অন্যত্র। চর জাগায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করতে পারছে না। অনেক মাঝি বেকার হয়ে পড়ছে। চরবাসী জানায়, আগে যমুনার নদীপথে নিয়মিত তেল-সারসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে জাহাজ চলাচল করায় জাহাজ গড়ান নদী হিসেবে পরিচিত রয়েছে। নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় এখন কোনো জাহাজ উত্তর দিকে যাতায়াত করছে না। নদীর এমন অবস্থা জাহাজ তো দূরের কথা পণ্য বোঝাই নৌকা নিয়ে হাটে যাওয়াই কঠিন। স্থানীয় কাজলা ইউনিয়নের চকরথিনাথ চরের গোলাম রব্বানী জানান, খরা মৌসুমে নদীতে পানি কম থাকলে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন হেঁটে অনেক পথ পাড়ি দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে। আগে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে সারিয়াকান্দি সদরে এতে আবার দুপুরের মধ্যেই ফেরা যেত। এখন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতের আগে ফেরা যায় না। জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বগুড়ায় যমুনা নদী খনন করে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এর নাব্য রাখা হবে। বাকি অংশের জমি উদ্ধার করে বসতবাড়ি, কৃষি ফসল ও অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। শিগগিরই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর