শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাস টার্মিনাল নেই গোবিন্দগঞ্জে বাড়ছে ভোগান্তি

গৌতমাশিস গুহ সরকার, গাইবান্ধা

বাস টার্মিনাল নেই গোবিন্দগঞ্জে বাড়ছে ভোগান্তি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় নেই কোনো বাসস্ট্যান্ড বা টার্মিনাল। উপজেলা থেকে রংপুর, গাইবান্ধা, মহিমাগঞ্জ, দিনাজপুর, হিলি, বগুড়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল করে। কিন্তু কোনো বাস টার্মিনাল না থাকায় বাসগুলো সড়ক ও মহাসড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এতে যেমন জানযটের সৃষ্টি হয় তেমনি যাত্রীরা পড়েন নানা ভোগান্তিতে। গোবিন্দগঞ্জের স্থানীয় মালিকদের মালিকানায় চলাচল করে শতাধিক বাস ও মিনিবাস। এর পাশাপাশি আছে ট্রাক এবং কার মাইক্রোবাস ও পিকআপ। এসবের কোনোটির জন্যই নির্ধারিত কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকাসহ মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে যানবাহনগুলো এলোমেলোভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। নিয়মিত যাত্রী ওঠানামাসহ দীর্ঘসময় ধরে এগুলো অবস্থান করায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ব্যস্ত চৌমাথা, পশ্চিম স্ট্যান্ড নামে পরিচিত পশ্চিম চারমাথা স্থান। গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কে গোবিন্দগঞ্জ থানার বিপরীতে, গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কের জাওয়াদ প্লাজার পাশে বাস ও মিনিবাসগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠানো হয়। থানার উল্টোদিকের ফুটপাতের ওপর যাত্রী ছাউনি ও বাসের কাউন্টার করায় মানুষের চলাচলের পথে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ চৌরাস্তার মোড়ে দুটি খাবার হোটেলের সামনে নিয়মিত বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। এ ছাড়া দূরপাল্লার বাস যেগুলো ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামে যাতায়াত করে সেগুলো মহাসড়কের ধারেই কাউন্টার খুলে টিকিট বিক্রি করে।  কাউন্টারগুলোর সামনে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ও মালামাল ওঠানামা করায় যানজটসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করছে বলে পৌরবাসীর অভিযোগ রয়েছে। পৌর শহরের বাসিন্দা ঝন্টু মিয়া বলেন, পৌর শহরে ৪০ হাজার মানুষের বাস। এ পৌর শহরের ভিতর দিয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক চলে গেছে। আর এ সড়কের দুই ধারে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, দোকান, শপিং সেন্টার, বাজার, ব্যাংক বিমা, স্কুল সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাই এ সড়কে বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা ও যাত্রী ওঠানামা করায় পৌরবাসীর চলাচলে তা নানাবিধ অসুবিধার সৃষ্টি করছে। ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক পারাপারের সময় বিড়ম্বনায় পড়ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সব বয়সী মানুষ। এখানে বাস টার্মিনাল করা জরুরি হয়ে পড়েছে। নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মতিন মোল্লা বলেন, রংপুর বিভাগের প্রবেশদ্বার হওয়ায় গোবিন্দগঞ্জের ওপর দিয়ে হাজার হাজার বাস প্রতিদিন যাতায়াত করে। অধিকাংশ বাসই এখানে যাত্রী ওঠানামা করায়।

যাত্রীদের রোদ বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। টার্মিনাল না থাকায় নারীসহ সব বয়সী যাত্রীই টয়লেট সমস্যায় পড়েন। পরিবহন শ্রমিকরাও গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ, ধোয়ামোছাসহ তাদের নানা কাজকর্ম নিরাপদে করতে পারছেন না। গোবিন্দগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত গাইবান্ধা জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাজু বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে টার্মিনালের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু টার্মিনাল না থাকায় আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গাড়িগুলো নিরাপদ স্থানে রাখতে পারলে আমরাও ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারি। পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি বলেন, গোবিন্দগঞ্জে বাস টার্মিনাল করার ইচ্ছা আমাদের আছে। কিন্তু ফান্ডের অভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।

সর্বশেষ খবর