বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেচের অভাবে ফেটে চৌচির বোরো খেত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

সেচের অভাবে ফেটে চৌচির বোরো খেত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার একটি বোরো খেত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সোনাইডাঙ্গা গ্রামের সোলারচালিত সেচপাম্পের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সেচের অভাবে নষ্ট হচ্ছে প্রায় ৪০ বিঘার বোরো খেত। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। পাওনা টাকা না দেওয়ায় ১০ দিন আগে পাম্পটির সুইচ খুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ‘সালেক সোলার পাওয়ার লিমিটেডে’র এরিয়া ম্যানেজার সুজন মিয়া। জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোবিন্দগঞ্জের হরিরামপুর ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা বৈকুণ্ঠপুর গ্রামের কৃষক রাজা মিয়া জানান, এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। চারা রোপণসহ সার-কীটনাশক প্রয়োগ শেষে ধানের শীষ যখন বের হবে ঠিক তখন সোলার পাম্পের সুইচ খুলে নেওয়ায় বন্ধ রয়েছে সেচ। পানির অভাবে ধান গাছ লালচে হয়ে যাচ্ছে। জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। একই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর বেপারি জানান, সোলারচালিত পাম্পের সুইচ খুলে নিয়ে সেচ কাজ বন্ধ করায় আমার দুই বিঘা জমিতে ১০ দিন ধরে পানি দিতে পারছি না। খেতের মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আর দু-তিন দিন এ অবস্থা থাকলে ফসল পুড়ে যাবে। সোলার সেচপাম্প মাঠ পরিচালক ফিরোজ মিয়া জানান, প্রায় সাত বছর আগে এ পাম্পটি পরিচালনার জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা চুক্তিতে আমাকে দায়িত্ব দেয় ‘সালেক সোলার পাওয়ার লিমিডিট’। কৃষকদের কাছ থেকে বিঘাপ্রতি ২ হাজার টাকা ভাড়া তুলে এ সোলার কোম্পানিকে দিতাম। ২০২১ ও ২০২২ সালের জন্য আমাকে সেচ পাম্পটি আর্থিক চুক্তিতে তারা দেয়। দুই বছরে সালেক সোলার পাওয়ার লিমিটেডের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেনকে আমি নগদ ১ লাখ টাকা পরিশোধ করি। ২০২৩ সাল শুরু হওয়ার পর তারা বারবার টাকার জন্য চাপ দিলে আমি ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর দিতে চাই কিন্তু তারা তা মানেনি। এরপর ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন ও এরিয়া ম্যানেজার সুজন মিয়া এ সোলার সেচপাম্পটির মেইন সুইচসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি খুলে নেন। ফলে পাম্পটি বন্ধ হয়ে যায়। সেচপাম্প ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন জানান, এই পাম্পের বার্ষিক খরচ বাবদ ৪৫ হাজার টাকা বকেয়া থাকায় মেইন সুইচ খুলে নিয়েছেন সালেক সোলার পাওয়ার লিমিটেডের এরিয়া ম্যানেজার সুজন মিয়া। এ বিষয়ে সুজন মিয়া বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে মেইন সুইচ খুলে এনেছি। পাওনা পরিশোধ না করলে সংযোগ দেওয়ার সুযোগ নেই। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘এই ভরা মৌসুমে জমিতে পানি দিতে না পারলে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সেচ সংযোগ দেওয়াসহ মেইন সুইচ বন্ধের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর