বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঈদে মহাসড়কে যানজট ভোগান্তির শঙ্কা

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

ঈদে মহাসড়কে যানজট ভোগান্তির শঙ্কা

ফোর লেনের উন্নয়ন কাজ ধীরগতিতে চলমান থাকায় রাস্তায় ঝুঁকিপূর্ণ খানাখন্দ ও ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মোড় হওয়ার কারণে এবার ঈদযাত্রায় ভোগান্তির কারণ হতে পারে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার অংশ। এ ছাড়াও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দুই লেন থেকে এক লেনে যানবাহন প্রবেশ করার কারণে এখনই মাঝেমধ্যে দেখা দিচ্ছে যানজট ও ধীরগতি। এ অবস্থায় ঈদযাত্রায় যানবাহনের চাপ তিন থেকে চার গুণ বাড়লে মহাসড়কটিতে যানজট তীব্র হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে চালকরা। সওজ সূত্রে জানা যায়, যানজট লাঘব এবং দুর্ঘটনা এড়াতে ২০১৯ সালে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়। সিরাজগঞ্জ অংশে বঙ্গবন্ধু পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত মীর আকতার গ্রুপ এবং হাটিকুমরুল থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত মোনায়েম গ্রুপ কাজ দুটি পায়। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু কাজের গতি ধীর হওয়ায় এখনো অনেকাংশ কাজ বাদ রয়েছে। গত চার বছরে প্রতি ঈদে বঙ্গবন্ধু থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশে যানজন সৃষ্টি হয়। এ বছরে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি, সংস্কার ও বর্ধিতকরণের কাজ চলমান থাকায় যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশ যানজটের কারণ হিসেবে ১৪টি পয়েন্ট শনাক্ত করেছে এবং দ্রুত এ পয়েন্টগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের নির্দেশনা দিয়েছে। যদি ঈদের আগে এগুলো সংস্কার করা না হয় তবে এবারও ঈদুল ফিতরে ঘরে ফেরা মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত মহাসড়কের চার লেনের উন্নয়ন কাজ চলছে। সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। কোনো কোনো স্থানে কাজ চলার কারণে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন অন্য লেনে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। কখনো ধীরগতি, কখনো থেমে থেমে, আবার কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। গাড়ি চালক সোবহান উদ্দিন ও আকবর জানান, মহাসড়কে বিভিন্ন কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এবারও ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে আমাদের। কারণ কয়েক বছর ধরে চলছে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চার লেনের কাজ। ধীরগতির কারণে কাজ শেষ হচ্ছে না। কাজ শেষ হলে স্বস্তি মিলবে। এ ছাড়া ঈদে মহাসড়কের ট্রাক ও মোটরসাইকেল চলাচল করলেও যানজট সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। সওজের সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। মহাসড়কের  যেসব স্থানে খানাখন্দ রয়েছে, সেগুলো মেরামত করে দেওয়া হবে। সলঙ্গা বাজার, দাদপুর বাজার, ঘুড়কা বাজার, ভূঁইয়াগাতী বাজার ও চান্দাইকোনা বাজার এলাকায় চার লেনের নতুন সড়ক ১৫ রমজানের মধ্যে খুলে দেওয়া হবে। সড়ক খুলে দিলে আশা করা যায় যানজট কমে যাবে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল কবির জানান, ঈদে আমাদের ১০টি মোবাইল টিম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করবে। পাশাপাশি ১৬টি পকেট টিম ১৬টি স্থানে কাজ করবে। সব মিলিয়ে ঈদে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে আমাদের মোট ১৪৪ জন পুলিশ সদস্য কাজ করবেন। এ ছাড়াও দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন দ্রুত অপসারণের জন্য রেকার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হবে।  সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ১৪টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রকল্প এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সংস্কার করে দেবে তারা। তবে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের কাজ চলমান থাকায় এবারও কিছুটা দুর্ভোগে পোহাতে হবে যাত্রীদের।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর