শিরোনাম
সোমবার, ১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

সার-সেচের ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

সার-সেচের ঋণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নে বিএডিসির বোরো ধানের বীজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক কৃষক। তাদের অভিযোগ, উপজেলা বিএডিসির অফিস থেকে সরবরাহ করা ব্রি-৭৪ (জিং) ধানের বীজে গাছ হয়েছে একাধিক জাতের। এমন প্রতারণার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কৃষি অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, বিভিন্ন ধানের মিশ্রণ থাকায় কোনোটার শীষে ধান ধরেছে, আবার কোনোটার এখনো ধানই আসেনি। একই জমিতে ফসলের এমন তারতম্য থাকায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এতে চাষাবাদের খরচ ও ফসল উৎপাদনে ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন তারা। এক জাতের বীজে একাধিক জাত তৈরির কারণ উদ্ঘাটন ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক। বিএডিসির কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশীরাম ও উত্তর ঘণেশ্যাম গ্রামে বেশ কয়েকজন চাষি বিএডিসির কালীগঞ্জ শাখা অফিস থেকে ব্রি-৭৪ (জিং) জাতের ধানের বীজ কেনেন।

তারা খেতে সঠিক মাত্রায় সেচ, সার দেন। অন্য সবার মতো তাদের খেতও দেখতে বেশ সুন্দর হয়। কিন্তু চারা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেতের ফসলে তারতম্য দেখা দেয়। খেতের কিছু অংশে যখন ধানের থোড় আসছে, অন্য অংশে আসছে না। আবার কোনো জমিতে ধানের শীষ পরিপক্ব হয়ে গেলেও অন্য পাশে এখনো থোড়ই বের হয়নি। জমিতে ফসলের এ রকম তারতম্য দেখে তারা ফলন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। প্রতি বিঘায় ধান চাষে তাদের ১০-১৫ হাজার খরচ হয়েছে। এসব জমিতে স্বাভাবিক ধান হলে বিঘায় ২০-২২ মণ উৎপাদন হয়। এখন ফসলের এ রকম তারতম্যের কারণে এসব জমিতে বিঘায় ৮ থেকে ১০ মণ ধান উৎপাদন হবে। যাতে তাদের বিঘাপ্রতি ৬-৭ হাজার টাকা লোকসান হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে না পারলে সার-সেচের ঋণ পরিশোধ করবেন কীভাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।

আজিজার নামে এক কৃষক জানান, বিএডিসির অফিসের পরামর্শে ৪ বিঘা ধান লাগিয়েছি। এখন সব ধানেই ভেজাল। এই ভেজাল ধান বিক্রি করতে পারব না। এত টাকা খরচ করে, রোদে পুড়ে এই ধান চাষ করে শেষ সময়ে খেতের ফসলের এ অবস্থায় হতাশ হয়ে পড়েছি। আলমগীর হোসেন নামে আরেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বলেন, ব্রি-৭৪ জাতের ধানের বীজ কিনেছিলাম। এখন জমিতে সেই ধানের চারা লাগিয়ে দেখছি ব্রি-ধান ৭৪ ছাড়াও হাইব্রিড জাতের শীষ বের হচ্ছে। আবার খেতের কোনো অংশে ধানের শীষই বের হয়নি। এ কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা খাতুন বলেন কয়েকজন কৃষক লিখিত অভিযোগ করে গেছেন বিএডিসির বীজের ব্যাপারে, এখানে আমার কোনো হাত নেই। যদি বীজে ভেজাল থাকে তাহলে বিএডিসির জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কালীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ইসরাত জাহান ছনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লালমনিরহাট বিএডিসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোছা. আক্তারুন নাহার রুবি বলেন, আমাদের কাছ থেকে এই বীজ কৃষক কিনেছেন কি না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর