বুধবার, ৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ধান কাটতে বিভিন্ন জেলায় ছুটছেন কৃষিশ্রমিক

দিনাজপুর প্রতিনিধি

ধান কাটতে বিভিন্ন জেলায় ছুটছেন কৃষিশ্রমিক

বেকার বসে না থেকে বাড়তি অর্থ উপার্জনে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলার কৃষিশ্রমিকরা ধান কাটতে ছুটছেন বিভিন্ন জেলায়। আমাদের উপজেলায় পুরোপুরি ধান পাকতে কমপক্ষে মাস খানেক সময় লাগবে। এ সময় বাড়িতে বেকার বসে না থেকে দলে দলে ছুটছেন বিভিন্ন জেলায়। যেসব এলাকায় ধান পেকেছে সেসব এলাকায় ধান কাটতে যাচ্ছেন তারা। স্থানীয়ভাবে ধান কাটা শুরু হলে সব শ্রমিকই এলাকায় ফিরে আসবেন। ধান কাটা শ্রমিকরা ১০-১৫ জন মিলে একটি দল করে বিভিন্ন জেলায় বাস ও ট্রেনে করে ছুটছেন। এমনটাই জানালেন ওইসব কৃষিশ্রমিক। কয়েকজন শ্রমিক জানায়, চৈত্র-বৈশাখ মাসে মূলত কৃষিশ্রমিকের হাতে তেমন কাজ থাকে না। কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকেই বেকার হয়ে পড়েন। অনেকেই সুদের (দাদন) ওপরে টাকা নেন। কেউ বা ধারদেনা করে টাকা নিয়ে আগাম ধান কাটার জন্য বাইরের জেলায় চলে যান। সেখানে কয়েক দিন ধান কাটা-মাড়াই করে অর্থ উপার্জন করে ১০-২০ দিন পর বাড়িতে ফিরে আসবেন। এর মধ্যে নিজ এলাকায় ধান পাকলে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করবেন। এখন প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন এনজিও এবং সংস্থায় কিস্তি দিতে হচ্ছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই ধান কাটতে দেশের দক্ষিণের জেলাগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন শ্রমিকরা। টাঙ্গাইলে যাওয়ার জন্য চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন দলে দলে বিভক্ত কয়েকটি শ্রমিকের দল। তাদের মধ্যে খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউপির কালিরবাজার গ্রামের তরিকুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী ও জহুরুল হক জানান, প্রতি বছর আগাম ধান কাটার জন্য দল বেঁধে সেখানে যান তারা। এ বছরও সেখানকার পরিচিত কৃষকরা মুঠোফোনে কল করেছেন। তাই দল বেঁধে সেখানে যাচ্ছি। ধান কেটে দেওয়ার জন্য বাড়িতে খাওয়া খরচ এবং কিস্তি পরিশোধের জন্য কিছু টাকা রেখে যাচ্ছি। সঙ্গে কিছু টাকা নিয়ে গন্তব্যে রওয়ানা দিচ্ছি। রানীরবন্দর বাসস্ট্যান্ড থেকে রাতের বাসে টাঙ্গাইল যাচ্ছেন আরেকটি ধান কাটা শ্রমিকের দল। এসব শ্রমিক কাপড়ের ব্যাগে করে প্রয়োজনীয় কাপড়, কাস্তে, রশি ও ধান বহনের বাঙ্কুয়া ঘাড়ে নিয়ে যাচ্ছেন ধান কাটতে। এই দলে রয়েছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে জাহিদুল হক, আবদুল মজিদ ও ফজলু জানান, তারা এসেছেন খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের হকেরহাটের বালাপাড়া গ্রাম থেকে। তারা ধান কাটতে যাচ্ছেন টাঙ্গাঈল জেলায়। সেখানকার পরিচিত কৃষকরা বার বার ফোন করে জানিয়েছেন, তাদের ধান পেকে জমিতে পড়ে যাচ্ছে। আবার অনেক শ্রমিক ধান কাটতে বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, সান্তাহার, সিরাজগঞ্জ, নাটোরও যাচ্ছেন। খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জানান, প্রতি বছর এ সময়ে উপজেলা থেকে কয়েক হাজার ধান কাটা শ্রমিক বাড়িঘর ছেড়ে চলে যান।

সর্বশেষ খবর