রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাঙালি নদীর বালু লুট

দেখা দিয়েছে ভাঙন, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বাঙালি নদীর বালু লুট

শেরপুরে বাঙালি নদীতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে তোলা হচ্ছে বালু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ার শেরপুরে বাঙালি নদী থেকে অবাধে বালু লুট করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বালু মহালের অনুমতি না থাকার পরও শত শত ট্রাকে বালু বিক্রি করছে চক্রটি। বাঙালি নদীর অন্তত আটটি পয়েন্টে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলায় তীরবর্তী ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে বালু তোলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা যায়, শেরপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বহমান বাঙালি নদী। এ অংশে কোনো বালু মহাল না থাকলেও সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর হঠাৎপাড়া ও কল্যাণী খেয়া ঘাটে তিনটি শ্যালো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। ভুক্তভোগী একাধিক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় নদীর তীরের ফসলি জমিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ছাড়া নদীর অন্যপ্রান্তে বিনোদপুর গ্রামে নবনির্মিত বেড়িবাঁধটিও হুমকিতে পড়েছে। এভাবে বালু তোলা অব্যাহত থাকলে বাঁধেও ভাঙন দেখা দিতে পারে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। একইভাবে সরকার দলীয় নেতাদের নাম ভাঙিয়ে উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের শালফা, বোয়ালকান্দি, গজারিয়া, বড়ইতলী এবং খামারকান্দি ইউনিয়নের ঝাঝর এলাকায় অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। শেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইজারাদার গোলাম হোসেন বলেন, সম্প্রতি ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ী ও নান্দিয়ার পাড়া নদী খননের বালুর টেন্ডার দেওয়া হয়। নিলামে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ব্যাংক চালান ও ট্যাক্স-ভ্যাট পরিশোধ করে আমি বালু কিনেছি। এতে সরকার বিপুল অঙ্কের টাকা রাজস্ব পেয়েছে। আমাদের এ বালু মহালের পাশেই শেরপুর অংশে বাঙালি নদীর অন্তত আটটি পয়েন্টে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এ থেকে সরকার কানাকড়িও পাচ্ছে না। অবৈধভাবে তোলা বালুর কারণে সরকারি নিলামের বালু বিক্রি করা যাচ্ছে না। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা জানান, বাঙালি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কোনো সুযোগ নেই। এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, বাঙালি নদীর শেরপুর অংশে আমাদের কোনো বালু মহাল নেই। সেখানে কেউ বালু তুললে তা অবৈধভাবে করছেন। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা হলে নদী-তীরবর্তী ফসলি জমি ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর