রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বর্ষার আগেই যমুনায় ভাঙন

হুমকিতে ঘরবাড়ি জমি আতঙ্কে নদীতীরবাসী

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

বর্ষার আগেই যমুনায় ভাঙন

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে যমুনা নদীতে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বর্ষার আগেই যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধশতাধিক বসতভিটাসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে নদীর তীরবর্তী এনায়েতপুর স্পার এলাকা থেকে পাঁচিল পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটারের শত শত স্থাপনা ও জমি। স্থানীয়রা বলছেন, দুই যুগ ধরে ভাঙন অব্যাহত থাকার পর গত বছর ৬৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়। কিন্তু সঠিক সময়ে কাজ শুরু না করায় এবারও ভাঙনের কবলে পড়ছে বিস্তীর্ণ জনপদ। ঘরবাড়ি হারানোর ভয়ে দিন কাটছে যমুনা তীরের বাসিন্দাদের। ভাঙনের শিকার মানুষগুলো বসতভিটা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভাঙনকবলিত ব্রাহ্মণ গ্রামের মনিরুল ইসলাম, হাসমত, সিদ্দিক ও আবদুর রউফ জানান, দুই যুগ ধরে এনায়েতপুর স্পার থেকে দক্ষিণাঞ্চলে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এসব এলাকার হাজার হাজার বসতভিটা, ফসলি জমি, মসজিদ, মাদরাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও হাট-বাজার নদীর পেটে চলে গেছে। বহু মানুষ সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। দীর্ঘদিনের দাবিতে পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এনায়েতপুর স্পার এলাকা থেকে পাঁচিল পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য ৬৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। গত বছর কাজের টেন্ডারও হয়েছে। কিন্তু পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি। তাদের গাফিলতির কারণে এক সপ্তাহ আগে স্পার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহের ভাঙনে অর্ধশতাধিক স্থাপনা হারিয়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষার আগেই যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে তা অব্যাহত থাকলে বর্ষা মৌসুমে অন্তত ১০ গ্রামের হাজার হাজার বসতভিটা বিলীন হয়ে যাবে। তাদের অভিযোগ, ভাঙন শুরু হলেও পাউবো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। একই গ্রামের নুর হোসেন, নুর ইসলাম, পাশান, মনতাজ আলী ও মোহাম্মদ আলী হোসেন জানান, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতরভাবে বসবাস করছে। অনেকে আশ্রয়ের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ তাদের খোঁজ নিচ্ছেন না। এ অবস্থায় ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভাঙনকবলিতরা। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। জিও টিউবও সংযোজন করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর