মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বনের ভিতর ৬১ অবৈধ করাত কল

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বনাঞ্চালের ভিতর গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন ৬১টি করাতকল। উপজেলার তিনটি রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা অবৈধ করাতকলে চিরানো হচ্ছে বনের অবৈধ কাঠ। ফলে উজাড় হচ্ছে সামাজিক ও শাল-গজারি বন। এতে পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে বলে মনে করেন পরিবেশ  অধিদফতর ও সচেতন মহল। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার  হতেয়া রেঞ্জ এলাকায় বংকুরিপাড়ায় দুটি, কেরানিপাড়ায় দুটি, চতলবাইদে দুটি ও বাজাইল এলাকায় একটি অবৈধ করাতকল স্থাপিত হয়েছে। বাঁশতৈল রেঞ্জের পাথরঘাটা এলাকায় একটি, নলুয়ায় পাঁচটি, বংশীনগর এলাকায় পাঁচটি অবৈধ করাতকল রয়েছে। এদিকে বহেড়াতৈল রেঞ্জের গড়বাড়িতে দুটি, সাপিয়ার চালায় দুটি, আলিসার বাজারে তিনটি, বড়চওনায় পাঁচটি, কচুয়ায় একটি, দেবরাজে দুটি, গোহাইলবাড়িতে দুটি, বেতুয়ায় একটি, ডাবাইলে দুটি, বেলতলীতে একটি, জামাল হাটকুড়ায় একটি, আবেদনগরে তিনটি, হেংগারচালায় একটি, খুইংগারচালায়  একটি, বাঘেরবাড়িতে দুটি, হামিদপুরে দুটি, দিঘীরচালায় দুটি তৈলধরায় একটি, মহানন্দপুরে দুটি, জিতাশ্বরীতে দুটি, ছোট চওনায় একটি, শ্রীপুরে একটি, কুতুবপুরে তিনটি। এভাবে ৬১টি অবৈধ করাতকল স্থাপন করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করাতকলগুলো বনের জমি ঘেঁষে ও বনের জমিতে স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে অবাদে চিরানো হচ্ছে শাল-গজারি,  সেগুন, আকাশমনি, মেহগুনিসহ বনের নানা প্রজাতির কাঠ। স্থানীয় বন বিভাগ জানায়, ২০১২ সালের বন আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের ১০ কিলোমিটার দূরে করাত কল স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া বন ঘেঁষে বা বনের জমিতে করাতকল স্থাপনের কোনো আইন বা বৈধতা নেই। বহেড়াতৈল রেঞ্জকর্মকর্তা এ কে এম আমিনুর রহমান বলেন, বহেড়াতৈলীতে ১১টি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ করে মালিকদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। অনেককেই এখনো জেলহাজতে আছে তারপরও যারা করাতকল চালু রেখেছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ডিএফও স্যারের পরামর্শ নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। করাতকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান হেলাল বলেন, বন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে সিএস ভুক্ত জমিতে করাতকল স্থাপন করেছি। আমরা লাইসেন্সের আবেদন করেছি কিন্তু আবেদন পাচ্ছি না। যে কারণেই আমরা অবৈধ। এ ছাড়া আমরা কোনো অবৈধ কাঠ চিরাই না।

টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদফতর কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, পরিবেশ রক্ষার্থে গাছের কোনো বিকল্প নেই। এই যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে তাতে আমরাই বিপদের সম্মুখে যাচ্ছি। তাই আমাদের পরিবেশ রক্ষার্থে প্রতিদিন গাছ লাগানো উচিত। টাঙ্গাইল জেলা বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, বন ও পরিবেশ রক্ষর্থে সখীপুরের অবৈধ করাতকলগুলো উচ্ছেদ করতে কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে, তাদের নামে মালা দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর