তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে ব্যাপক হারে বেড়েছে তামাক চাষ। এতে একদিকে পরিবেশের ওপর যেমন পড়ছে বিরূপ প্রভাব। সেই সঙ্গে এসব এক বা দুই ফসলি জমির মাটির গুণাগুণও নষ্ট হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিস্তা নদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে দিন দিন বেড়েই চলেছে ফসলের চাষাবাদ। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে নদীর বুকজুড়ে জেগে ওঠা চরের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে থাকে ফসলের সমারোহ। বন্যার সময় উজানের পানির ঢলের সঙ্গে আসা পলিমাটিতে তিস্তার তীরঘেঁষা কৃষিজমি এবং চরাঞ্চলের মাটির উর্বরতা বাড়ছে। এতে ফসলি জমি বাড়ার সঙ্গে বেশি করে চাষাবাদে ঝুঁকছেন তিস্তাপাড়ের কৃষক। কিন্তু চরের জমিতে আবাদ হওয়া এসব ফসলের একটা বড় অংশই তামাক। সরেজমিন তিস্তার প্রত্যন্ত চরগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার অন্তত এক- তৃতীয়াংশ জমিতে আবাদ করা হয়েছে তামাক। কোথাও কোথাও তা আরও বেশি। যার মধ্যে কোনোটা হয়েছে কর্তনযোগ্য কোনোটা কেটে সেই জমিতেই শুকাতে দেওয়া হয়েছে। কোনোটায় আবার নারী-পুরুষ এমনকি শিশুদের দিয়ে চলছে পরিচর্যা। কৃষকরা স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ তামাক চাষের ক্ষতিকর প্রভাব জেনেশুনেই করেন এর আবাদ। বেশি লাভের আশায় তিস্তার বিস্তীর্ণ এলাকায় হয়েছে এই বিষবৃক্ষের চাষ। ধান, ভুট্টা, আলু, বাদামসহ শীতকালীন শাকসবজির জন্য উপযুক্ত হলেও চরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জমি দখল করেছে তামাক। লালমনিরহাট সদর উপজেলার আনন্দবাজার গ্রামের কৃষক মতলেব আলী জানান, এক দোন (স্থানীয়ভাবে ২৮ শতাংশ সমান এক দোন) জমি এক মৌসুমের জন্য ৪ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে তামাক আবাদ করছেন তিনি। তামাক কোম্পানির প্রণোদনার সার, বীজ, কীটনাশকে এর আবাদ করা তাঁর জন্য সহজ হয়েছে। তামাকপাতা শুকানোর পর বিক্রির জন্য বেগও পেতে হয় না। কেননা ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি তাঁকে এক একর জমিতে তামাক চাষের জন্য প্রণোদনা দিয়েছে। তাঁর উৎপাদন করা তামাক ওই কোম্পানি নির্ধারিত দামে কিনে নেয়। স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে জেনেও বেশি লাভের আশায় তাই তামাক আবাদ করেছেন তিনি। রাজপুর ইউনিয়নের চিনাতুলি এলাকার কৃষক হাকিম মিয়া জানান, ভুট্টা, বাদামের পাশাপাশি তিন একরের অধিক নিজের জমিতে তিনি তামাক আবাদ করেছেন। যার অল্প কিছু কাটতে বাকি। নারী শ্রমিক আড়াই শ টাকা আর পুরুষ শ্রমিকদের সাড়ে তিন শ টাকা দিয়ে তামাকের জমিতে শুরু থেকে কাজ করাচ্ছেন। হাকিম আরও জানান, বছরের একটা সময়ে ফসল আবাদ হয় এসব জমিতে। অন্য সময় পানিতে ডুবে থাকে। কোনো কোনো জমিতে অবশ্য ধান আবাদের পর তামাক আবাদ করেন কৃষকরা। খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের মিলন বাজার এলাকার কৃষক আফিয়ার জানান, গাছ পূর্ণবয়স্ক হলে পাতা ছিঁড়ে শুকাতে দেওয়ার কাজ করতে হবে। ওই সময় তামাকের গাছ থেকে বিকট গন্ধ বের হয়। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দা সিফাত জাহান জেলায় গতবারের তুলনায় আবাদ বেড়েছে স্বীকার করে বলেন, তামাক বিষাক্ত ফসল। কৃষক পরিবারের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে এর চাষাবাদ নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি অন্য ফসল আবাদেও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।
শিরোনাম
- ইসির ৯ কর্মকর্তাকে বদলি-পদায়ন
- জাতির গর্বিত প্রতিষ্ঠান সশস্ত্র বাহিনী: তারেক রহমান
- জাতিসংঘের কপ-৩০ জলবায়ু সম্মেলন ভেন্যুতে ভয়াবহ আগুন
- দেশের বাজারে কমলো স্বর্ণের দাম
- তরুণরাই গড়বে সুন্দর বাংলাদেশ: ইসরাফিল খসরু
- রুশ গোয়েন্দা জাহাজ থেকে লেজার নিক্ষেপ, যুক্তরাজ্যের কড়া হুঁশিয়ারি
- নেত্রকোনায় ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার আটক, ৭ দিনের কারাদণ্ড
- ফটিকছড়ি প্রেস ক্লাবের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন
- সীমান্তে কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি
- তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে নারীর নিরাপত্তা উন্নত হবে: শামা ওবায়েদ
- গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কাতারের নিন্দা
- ভারতীয় বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আবারও বাড়ালো পাকিস্তান
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের অভিযান, নিহত ৩০
- ঢাকার যে আসনের প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনলেন রিকশাচালক সুজন
- রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মিলে তৈরি করছে শান্তিচুক্তির খসড়া, বিপাকে ইউক্রেন
- চবিতে চীনের অর্থায়নে কনফুসিয়াস সেন্টার স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
- বেগম রোকেয়ার সুলতানা’স ড্রিমের বাংলা নাট্যরূপ মঞ্চস্থ করল আইইউবি থিয়েটার
- ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের ৩২ শতাংশই ৫-২৯ বছর বয়সী’
- টঙ্গীতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
- চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজ ছাত্র নিহত
তামাকের থাবায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশুরা
তিস্তার চরে বেড়েছে আবাদ, পরিবেশেও বিরূপ প্রভাব
রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর