উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও জয়পুরহাটে জেঁকে বসেছে শীত। তিন দিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাড়ছে ঠান্ডা রোগ। বিভিন্ন হাসপাতালে দেখা গেছে ভিড়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
দিনাজপুর : হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। তিন দিন ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। খেটে খাওয়া মানুষ এবং শিশু-বৃদ্ধদের দুর্ভোগ বেড়েছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে আলু, রসুন ও বোরোর বীজতলা নিয়ে চিন্তিত কৃষক। তাপমাত্রার পরিবর্তনে শীতজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডা রোগী। শিশু ও বৃদ্ধদের উষ্ণ পরিবেশে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্থানীয় বাজারে শীতের কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। সকালে চায়ের দোকানেও জমছে ভিড়। আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার ভোর ৬টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৭ শতাংশ এবং বাতাসের গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১ কিলোমিটার। অটোচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, মানুষ ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। আগে দিনে আয় করতাম ৫০০-৬০০ টাকা। এখন কমে এসেছে। মহাজনকে জমা দিয়ে সংসার চালানো কস্টকর হয়ে পড়ছে।
লালমনিরহাট : দিন দিন তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে এ জেলায়। কষ্টে আছেন তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান চর এলাকার মানুষ। গতকাল সারা দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর বাড়ছে। বুধবার ভোর ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ঘন কুয়াশা এবং হিমশীতল বাতাস বাড়িয়ে দিচ্ছে শীত।
জয়পুরহাট : হাড় কাঁপানো শীত জেলায় জেঁকে বসেছে। কুয়াশার সঙ্গে দমকা বাতাস বাড়িয়ে দিয়েছে ঠান্ডা। সড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে। কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তিন দিন ধরে দেখা নেই সূর্যের। ছিন্নমূল মানুষ বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। সদর উপজেলার হানাইল গ্রামের শাহনাজ আলী বলেন, তীব্র শীতে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল।
বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। রিকশাচালক দুলু মিয়া বলেন, অনেক বাতাস আর শীত। রিকশার যাত্রী পাওয়া যায় না। আমাদের আয় অনেক কমে গেছে। বদলগাছী আবাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, জয়পুরহাটসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁর বদলগাছীতে বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।