হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ-দেউন্দি সড়কের বেহাল দশা। সড়কের পুরোনো কার্পেটিং তুলে রাখা হয়েছে। শুরু হয়নি আর কোনো কাজ। পুরো সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। গর্তে পড়ে নষ্ট হয়ে যায় যানবাহনের যন্ত্রাংশ। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে ৪ ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা জানায়, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে দেউন্দ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। যাতে আসা-যাওয়া করে চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া, শানখলা, দেওরগাছ ও শায়েস্তাগঞ্জ সদর ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা। জেলা সদর, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা সদর ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কে আসা-যাওয়ার জন্য এ সড়ক ব্যবহার করে থাকেন স্থানীয়রা। কয়েক বছর ধরে সড়কটিতে খানাখন্দ হয়ে এমন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বৃষ্টি হলেই এসব খানাখন্দে হাঁটুপানি পর্যন্ত জমে থাকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট সড়কটি মেরামতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। দায়িত্ব পায় মেসার্স কেবি কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর বছরের শুরুতেই সড়কের পুরোনো কার্পেটিং তুলে রাখা হলেও, শুরু হয়নি আর কোনো কাজ। এ কারণে সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। এতে যান চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, গত ২৩-২০২৪ অর্থবছরে শায়েস্তাগঞ্জ থেকে দেউন্দি সড়কের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাকির মোহাম্মদ বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ৮৮৭ মিটার সড়ক মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যার প্রাক্কলন ব্যয় ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা হলেও ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকায় কার্যাদেশ পায় মেসার্স কেবি কনস্ট্রাকশন। ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট শুরু হয়ে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ১৩ মার্চ। তবে মেয়াদ শেষ হলেও কাজের কিছুই হয়নি। স্থানীয় জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, কাজ শুরুর পর থেকেই ফেলে রাখা হয়েছে সড়কটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, খানাখন্দ আর বেহাল দশায় এ সড়কে চলাচলে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চালকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিকল্প না থাকায় স্থানীয়রা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। মালামাল ও রোগী আনা-নেওয়ায় চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় তাদের। চালকরা বলছেন- এই সড়ক দিয়ে এখন আর কেউ যানবাহন নিয়ে আসতে চায় না। সড়কে প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কের এ বেহাল দশার কারণে নষ্ট হয়ে যায় যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। জনপ্রতিনিধি, জনসাধারণ ও যানবাহন চালকদের এখন একটাই দাবি দ্রুত সড়কটি সংস্কার। মেসার্স কেবি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মনসুর রশিদ কাজল বলেন, নানা জটিলতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। জনগণের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে দ্রুত এ সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হবে। হবিগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম বলেন- মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি, তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে।