অধিক ফলনের প্রত্যাশা আর প্রচলিত ধারণা থেকেই চুয়াডাঙ্গায় দিনদিন বাড়ছে রাসায়নিক সারের ব্যবহার। এতে বাড়তি খরচের অনুপাতে ফলন বৃদ্ধি না হলেও স্বাস্থ্যহানি ঘটছে কৃষিজমির।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে জেলায় আবাদযোগ্য কৃষিজমি রয়েছে ৯৪ হাজার ২২০ হেক্টর। চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) এসব জমিতে ফসল উৎপাদনের জন্য ৫২ হাজার ৯৬৮ টন ইউরিয়া, ১৬ হাজার ৬৬৭ টন টিএসপি, ২৯ হাজার ৫৫৭ টন ডিএপি ও ১৫ হাজার ৫০৯ টন এমওপি সার বরাদ্দের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এ সার দিয়েই এক বছরের চাষাবাদ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যাবে- মনে করেন এ দপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মাসুদুর রহমান সরকার। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকরা তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করেই বাড়তি রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ফলন বাড়লেও দীর্ঘদিন বাড়তি রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে আবাদি জমির স্বাস্থ্য বিনষ্ট হয়। দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের চাষি মান্নান মণ্ডল বলেন, তিনি এ বছর ছয় বিঘা জমিতে ব্রি-৫১ জাতের ধান আবাদ করছেন। তিনি ধানের জমিতে বিঘাপ্রতি ১২০-১৪০ কেজি সার ব্যবহার করে থাকেন। এতে তার ফলন ভালো হয়। একই গ্রামের চাষি ইদ্রিস আলী বলেন, বাপদাদার শেখানো প্রচলিত পদ্ধতি ও সার ব্যবসায়ীদের পরামর্শে তারা সার প্রয়োগ করেন। কৃষি বিভাগ বলছে, এক বিঘা জমির ধান উৎপাদন করতে সর্বোচ্চ ৫৪ কেজি ৫০০ গ্রাম রাসায়নিক সার ব্যবহার করা যাবে। এর মধ্যে ইউরিয়া ২৪ কেজি, টিএসপি ১১ কেজি, এমওপি ১৩ কেজি, জিপসাম ৬ কেজি ও দস্তা ৫০০ গ্রাম। এর সঙ্গে ৬৬০ কেজি জৈব সার দিলে জমির স্বাস্থ্য ঠিক রেখেই কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যাবে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে দিন দিন কৃষিজমির স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ মতো সারের ব্যবহার করলে ভালো ফলনের পাশাপাশি জমির উর্বরতাও অটুট থাকবে।