বাগেরহাটে প্রতারণার অভিযোগে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিষ্টারসহ (কাজী) চার জনের নামে মামলা হয়েছে। বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বৌলপুর গ্রামের মো. জাকারিয়া তালুকদার বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণ ও ভুক্তভোগী পরিবার থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বৌলপুর গ্রামের জাকারিয়া তালুকদারের সাথে একই উপজেলার খালকুলা গ্রামের অলিয়ার রহমানের মেয়ে মোসা. মারজানা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নিকাহ রেজিষ্টার হিসেবে আসা দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের খালকুলা গ্রামের মাওলানা আব্বাস আলী জোমাদ্দার ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহরে তাদের বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন। বিয়ের কিছুদিন পর তাদের সংসারে অশান্তি দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ জুলাই মারজানা আক্তার বাদী হয়ে জাকারিয়া তালুকদার ও তার মাকে আসামি করে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেন। আর এই মামলার সাথে একলাখ ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর লেখা একটি বিবাহ রেজিষ্ট্রির নকল দাখিল করেন। এই নকলের অসংলগ্ন তথ্য দেখে জাকারিয়া তালুকদার ও তার পরিবারসহ বিয়ের দিন উপস্থিত থাকা সবাই হতবাক হন। ছেলে পক্ষ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন মূল নিকাহ্ রেজিষ্টার তলিগাতী ইউনিয়নের হাফেজ মনিরুজ্জামান। তার রেজিষ্টার বই নিয়ে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন মাওলানা আব্বাস আলী।
জাকারিয়া তালুকদার নিকাহ্ রেজিষ্ট্রির নকল আনতে মনিরুজ্জামানের কাছে গেলে তাকে একলাখ ৪৪ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর লেখা, কন্যা তালাক প্রাপ্তা এবং বিবাহ পড়িয়েছেন কাজী মনিরুজ্জামান (নিজে) উল্লেখ করে একটি নকল কপি দেন। যার সাথে মারজানার যৌতুক মামলায় দাখিল করা নকলের সাথে অনেক অমিল দেখা যায়। জাকারিয়া তালুকদার দু'টি নকল দুই রকম কেন জানতে চাইলে নিকাহ্ রেজিষ্টার মনিরুজ্জামান এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করার কথা বলে তার অফিস থেকে বের করে দেন। এরপর জাকারিয়া তালুকদার বাগেরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে নিকাহ রেজিষ্টারসহ ৪ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে নিকাহ রেজিষ্টার হাফেজ মনিরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে এ ঘটনার জন্য মাওলানা আব্বাস আলী দায়ী বলে জানান। পরে উত্তেজিত হয়ে এসব বিষয়ে তার কথা বলার সময় নেই বলে জানান।
বাগেরহাটের জেলা রেজিষ্টার মো. মনিরুল হক প্রধান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তের পর মন্ত্রালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেদুল আলম বৃহস্পতিবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, আদালতে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তার নথি পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ